বিনোদন ডেস্ক
বাংলা কবিতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কবিতা ‘তোমরা যেখানে সাধ’ এবার সুরারোপিত হয়ে কণ্ঠ পেল ভারতের জনপ্রিয় শিল্পী শুভমিতা ব্যানার্জির গানে। বাংলাদেশের সুরকার ও সংগীত পরিচালক শাহীন সরদারের সুরে এবং পার্থ পালের সংগীতায়োজনে সোমবার (১০ নভেম্বর) কলকাতার ‘গানবাজনা মিউজিক গ্যারেজ’ স্টুডিওতে গানটির রেকর্ডিং সম্পন্ন হয়।
গানটি নিয়ে শিল্পী শুভমিতা ব্যানার্জি জানান, এটি তার প্রথম কবিতার গান। তিনি বলেন, “জীবনানন্দ দাশের কবিতা গাওয়া মানেই এক গভীর অনুভূতির যাত্রা। শাহীন সরদারের সুরে কবিতাটি এক নতুন প্রাণ পেয়েছে। আশা করছি, এটি কবিতা ও সংগীতপ্রেমী শ্রোতাদের কাছে ভালো লাগবে।”
সুরকার শাহীন সরদার জানান, বহুদিন ধরেই তার ইচ্ছে ছিল শুভমিতা ব্যানার্জির কণ্ঠে একটি গান তৈরি করার। তিনি বলেন, “জীবনানন্দ দাশের এই কবিতাটি নিয়ে কাজ করার সময় শুভমিতা অত্যন্ত মনোযোগী ছিলেন। গানটির সুরের বিভিন্ন আবেগঘন অংশ নিয়ে তিনি একাধিকবার অনলাইনে আলোচনা করেছেন। একজন বড় মাপের শিল্পীর এই আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্ব সত্যিই প্রশংসনীয়।”
শাহীন সরদার আরও বলেন, “আমরা চেয়েছি কবিতার মূল আবেগ ও ভাষার সৌন্দর্য যেন সুরে হারিয়ে না যায়। সংগীতের প্রতিটি পরত সাজানোর সময় চেষ্টা করেছি জীবনানন্দ দাশের ভাবজগতকে শ্রোতাদের কাছে সঙ্গীতের মাধ্যমে পৌঁছে দিতে।”
এর আগে ২০১০ সালে শাহীন সরদারের সুরে প্রকাশিত হয়েছিল ‘কবিতার গান’ শিরোনামের একটি অ্যালবাম, যেখানে ১০ জন খ্যাতনামা কবির ১১টি কবিতা স্থান পায়। সেই অ্যালবামে জীবনানন্দ দাশের পাশাপাশি জসীম উদদীন, শামসুর রাহমান, মাহবুব উল আলম চৌধুরী, আসাদ চৌধুরী, রফিক আজাদ, সমুদ্র গুপ্ত, নাসির আহমেদ ও সুমন সরদারসহ আরও কয়েকজন বিশিষ্ট কবির কবিতা অন্তর্ভুক্ত ছিল। অ্যালবামটি প্রকাশ করেছিল দেশীয় সঙ্গীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘সুরেলা প্রযোজনা’।
নতুনভাবে সুরারোপিত এই গানটি সেই ধারাবাহিকতারই অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সংগীত অঙ্গনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মতে, এই প্রকল্পটি আধুনিক সংগীতায়োজনের মাধ্যমে বাংলা কবিতাকে শ্রোতাদের কাছে নতুনভাবে উপস্থাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস।
জানা গেছে, শুভমিতা ব্যানার্জির কণ্ঠে জীবনানন্দ দাশের ‘তোমরা যেখানে সাধ’ কবিতার গানটির ভিডিওচিত্রায়নও সম্পন্ন করা হবে শিগগিরই। গানটি ভিডিওসহ অনলাইনে প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রযোজনা কর্তৃপক্ষ।
সংগীতজগতে এই উদ্যোগকে কবিতা ও সংগীতের এক সেতুবন্ধন হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলা সাহিত্য ও সংগীতপ্রেমীদের কাছে কবিতার গানের এই নতুন উপস্থাপনা একটি সৃজনশীল সংযোজন হিসেবে গুরুত্ব পেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।