খেলাধুলা ডেস্ক
ঘরের মাঠে চলতি মাসে দুটি আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। এর মধ্যে একটি নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ এবং অন্যটি ভারতের বিপক্ষে ২০২৭ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের খেলা। তবে টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে দুটি ম্যাচের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের টিকিট উন্মুক্ত হওয়ার মাত্র ছয় মিনিটের মধ্যেই সব সাধারণ গ্যালারির টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে যায়। অন্যদিকে নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের টিকিট ছাড়ার ২৬ ঘণ্টা পরও বিক্রি হয় মাত্র পাঁচ হাজারটি।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রতিযোগিতা কমিটির চেয়ারম্যান গোলাম গাউস জানান, ভারত ম্যাচের টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পর অল্প সময়ের মধ্যেই সব গ্যালারির টিকিট শেষ হয়ে যায়। তিনি বলেন, “সাধারণ গ্যালারির সব টিকিট ছয় মিনিটের মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। গ্রাহকরা এখনো অনলাইনে পেমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন, যার অর্ধেকের বেশি ইতোমধ্যেই পরিশোধ হয়েছে। বর্তমানে শুধু রেড বক্স ও হসপিটালিটি বক্সের টিকিট অবশিষ্ট আছে।”
আজ দুপুর ২টা থেকে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম Quicket–এর মাধ্যমে মোট ছয়টি ক্যাটাগরিতে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। টিকিট বিক্রি শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই বিপুল সংখ্যক দর্শক ওয়েবসাইটে প্রবেশ করায় সাইটটিতে উচ্চ ট্রাফিকের চাপ সৃষ্টি হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই কর্তৃপক্ষ “SOLD OUT” ঘোষণা করে।
বাফুফে জানিয়েছে, ছয় ক্যাটাগরির টিকিটের মধ্যে সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা (সাধারণ গ্যালারি)। ক্লাব হাউস-২ ও ভিআইপি বক্স-৩–এর টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে ৩,০০০ টাকা। ভিআইপি বক্স-২ ক্যাটাগরির টিকিটের দাম ৪,০০০ টাকা, ক্লাব হাউস-১ এর ৫,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ রেড বক্স ক্যাটাগরির টিকিটের মূল্য ৬,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাফুফে কর্মকর্তারা জানান, টিকিটের এই বিপুল চাহিদা বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের ঐতিহ্য ও আবেগের প্রতিফলন। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ক্রীড়া-ঐতিহ্য দর্শকদের মধ্যে বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। যদিও ম্যাচটি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে নিয়মরক্ষার হিসেবে গণ্য হচ্ছে, কারণ বাংলাদেশ ও ভারত—দুই দলই ইতোমধ্যে মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।
তবুও ম্যাচটিকে মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখছেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। ভারত-বাংলাদেশ মুখোমুখি হলে মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি দর্শকসারিতেও এক ধরনের আবেগ কাজ করে, যা টিকিট বিক্রিতে সরাসরি প্রতিফলিত হয়েছে।
অন্যদিকে নেপালের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে তুলনামূলকভাবে দর্শক আগ্রহ কম দেখা যাচ্ছে। বাফুফে কর্মকর্তারা বলছেন, প্রীতি ম্যাচের চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি ঐতিহাসিক আবহ ও আবেগের কারণে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
বাংলাদেশ দল আগামী ১৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে নেপালের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। এরপর ১৮ নভেম্বর একই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশ-ভারত মুখোমুখি লড়াই। এই দুই ম্যাচই ঘরের মাঠে খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস পুনর্গঠনের সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, দর্শকদের আগ্রহ টিকিট বিক্রির পরিসংখ্যানেই ফুটে উঠেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে দর্শক উপস্থিতি কমে গেলেও ভারত ম্যাচকে কেন্দ্র করে এই উচ্ছ্বাস দেশীয় ফুটবলের প্রতি জনমনে নতুন প্রত্যাশা জাগাতে পারে।