আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন স্থগিত করেছে প্রতিবেশী থাইল্যান্ড। গত সপ্তাহে সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে থাই সেনা আহত হওয়ার পর এই পদক্ষেপ নেয় দেশটি। দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সই করার মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, থাইল্যান্ডের সরকারি মুখপাত্রের বরাত দিয়ে সোমবার (১০ নভেম্বর) এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়। সীমান্তবর্তী সিসাকেত প্রদেশে ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে কয়েকজন থাই সেনা আহত হয়েছেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে থাই সরকার শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
কম্বোডিয়া অবশ্য জানিয়েছে, তারা এখনও চুক্তি বাস্তবায়নের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং শিগগিরই চুক্তি বাস্তবায়নে নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা রয়েছে। গত জুলাইয়ে সীমান্ত সংঘর্ষে ৪০ জনের বেশি নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এই চুক্তি সই করা হয়েছিল।
অক্টোবর মাসে মালয়েশিয়ায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই চুক্তিতে সই করে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। তবে থাইল্যান্ড একে “শান্তি চুক্তি” হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানায়। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তার সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সিদ্ধান্তের সঙ্গে তিনি একমত, কারণ সীমান্তে নিরাপত্তা হুমকি এখনও পুরোপুরি দূর হয়নি।
থাই সংবাদমাধ্যম ব্যাংকক পোস্ট জানায়, সীমান্ত টহল দেওয়ার সময় বিস্ফোরণে আহতদের মধ্যে একজন সেনার পা হারিয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী অনুতিন জানান, তিনি মঙ্গলবার আহত সেনাদের দেখতে যাবেন।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত বিরোধের ইতিহাস প্রায় এক শতাব্দী পুরানো। ফরাসি উপনিবেশিক শাসন শেষ হওয়ার পর সীমান্তরেখা নির্ধারণের সময় থেকেই এই বিরোধের সূচনা হয়। এরপর একাধিকবার দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে, যার ফলস্বরূপ প্রায় ৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তবে সংঘাতের কয়েক দিনের মধ্যেই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসেছিল।
অক্টোবরে মালয়েশিয়ায় স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তির পর উভয় দেশ ভারী অস্ত্র প্রত্যাহার ও একটি যৌথ পর্যবেক্ষক দল গঠনে সম্মত হয়। চুক্তির পরবর্তী ধাপে থাইল্যান্ডে আটক ১৮ কম্বোডিয়ান সেনাকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল, তবে সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণের পর পরিস্থিতি আবারও জটিল হয়ে উঠেছে।