জাতীয় ডেস্ক
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে দুই দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী জেনি চ্যাপম্যান। তিনি বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
সফরের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা ও অভিবাসন বিষয়ক উদ্যোগগুলো পর্যালোচনা করবেন। বিশেষত, রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরীদের সহায়তায় যুক্তরাজ্যের দেয়া সহযোগিতার ব্যাপারে তিনি সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন। এটি জেনি চ্যাপম্যানের বাংলাদেশে প্রথম সফর, এবং তিনি রোহিঙ্গা বিষয়ক বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যের নতুন সহায়তা ঘোষণা করতে পারেন বলে জানা গেছে।
ঢাকায় যুক্তরাজ্যের দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চ্যাপম্যান তার সফরকালে নারীদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে যুক্তরাজ্যের অর্থায়নে চলমান কর্মসূচিগুলোর বাস্তবায়ন পরিদর্শন করবেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
সফরের একপর্যায়ে তিনি অনিয়মিত অভিবাসন সংক্রান্ত সহযোগিতা নিয়ে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেবেন। সফরের প্রেক্ষাপটে চ্যাপম্যান বলেন, “যুক্তরাজ্য সত্যিকারের অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে পেরে গর্বিত। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা, জলবায়ু সংকট এবং অভিবাসনসহ নানা ক্ষেত্রে আমাদের যৌথ কার্যক্রম উভয় দেশের জন্যই বাস্তব এবং ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।”
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেছেন, “এই সফর বাংলাদেশের সঙ্গে একটি আধুনিক এবং পারস্পরিকভাবে উপকারী উন্নয়ন অংশীদারিত্বের প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে।”
এছাড়া, চ্যাপম্যান বাংলাদেশের সফরের সময় ১২টি এশীয় এবং আফ্রিকান দেশ ও অঞ্চলে জলবায়ু সংকটের মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যের নতুন সহায়তা প্রদানের ঘোষণাও দেবেন। এই সহায়তা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দুর্বল ও খাদ্য নিরাপত্তাহীন পরিবার এবং সম্প্রদায়ের জন্য স্থিতিস্থাপকতা তৈরির প্রকল্পে ব্যয় করা হবে। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে জলবায়ু-সহনশীল কৃষি কৌশলগুলোর দক্ষতা প্রশিক্ষণ, যা মৌসুমি বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়ক হবে।
এছাড়া, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য খাদ্য, আশ্রয়, বিশুদ্ধ পানি এবং অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী পরিষেবায় সহায়তা দিতে যুক্তরাজ্য সেপ্টেম্বর মাসে ২৭ মিলিয়ন পাউন্ডের সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।