খেলাধুলা ডেস্ক
বাংলাদেশের ফুটবলের নতুন তারকা হামজা চৌধুরী আবারও তার প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন। নেপালের বিপক্ষে গতকাল অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে দুর্দান্ত এক বাইসাইকেল কিকে সমতা এনে দলকে স্বস্তি দেন তিনি। প্রথমার্ধে ডিফেন্সের ভুলে গোল হজম করেছিল বাংলাদেশ, কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে যখন দল একটি গোলের জন্য মরিয়া ছিল, তখন হামজা তার অসাধারণ গোল করে দলের আশা পুনরুজ্জীবিত করেন।
এদিন ম্যাচের ৮০ মিনিটে হামজাকে তুলে নেন বাংলাদেশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। হামজা ও তার সতীর্থ জায়ান আহমেদ ম্যাচ চলাকালীন কিছুটা চোট পেয়েছিলেন, পরে মাঠ থেকে উঠে গিয়ে আইস ব্যাগ দিয়ে চিকিৎসা নেওয়া হয় তাদের পায়ে। হামজার চোট নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, বিশেষ করে ১৮ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে আসন্ন এশিয়ান কাপ বাছাই ম্যাচটি সামনে রেখে।
তবে বাংলাদেশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, হামজা ও জায়ানের চোট গুরুতর কিছু নয় এবং তারা ভারত ম্যাচে খেলতে সক্ষম হবেন। তিনি বলেন, “তাদের আঘাত গুরুতর কিছু নয়, স্বাভাবিক রয়েছে। ভারত ম্যাচ না খেলার মতো বিষয় নেই, তারা খেলবে।”
নেপালের কোচ হড়ি খাড়কা ম্যাচ শেষে স্বীকার করেছেন, হামজা মাঠে থাকলে তাদের জন্য ম্যাচ আরও কঠিন হতো। তিনি বলেন, “হামজা পুরো ম্যাচ (বাকি সময়) আক্রমণভাগে থাকলে আমাদের জন্য কষ্ট হতো। সে না থাকায় আমাদের সুবিধা হয়েছে।”
ম্যাচের পর হামজা তার ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, “শেষমুহূর্তের (গোলে) আরেকটি হতাশার রাত, ম্যাচটি আমাদের জেতা উচিত ছিল। সব সময়ের মতো আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ, চলুন একসঙ্গে থাকি! একইসঙ্গে (আসন্ন) বড় ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হই এবং সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ।”
হামজা চৌধুরী ২০২৩ সালের ২৫ মার্চ ভারতের শিলংয়ে প্রথমবার বাংলাদেশের জার্সি গায়ে মাঠে নামেন। এরপর ৪ জুন ভুটানের বিপক্ষে ঢাকায় প্রীতি ম্যাচে হামজা বাংলাদেশের হয়ে প্রথম গোল করেন। পরবর্তীতে ৯ অক্টোবর ঢাকায় হংকংয়ের বিপক্ষে দুর্দান্ত ফ্রি কিকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন। গতকাল নেপালের বিপক্ষে দুইটি গোল করার মাধ্যমে হামজার গোল সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ এবং ম্যাচ ৫টি।
হামজার উত্থান বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে আশার নতুন আলো হিসেবে দেখা দিয়েছে। তার গতিশীল খেলা এবং গোল করার দক্ষতা ভবিষ্যতে দেশের জন্য বড় অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।