সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি নাফ পরিবহনের মিনিবাসে আগুন লেগে তা সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়েছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৬টার দিকে শিমরাইল এলাকায় সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে চালক বাসটি মহাসড়কের পাশে রেখে চলে যান। রাতভর বাসটি সেখানে অবস্থান করছিল। শনিবার ভোরে স্থানীয়রা বাস থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি জানান।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুন লাগার আগে বাসটির ভেতরের সব সিট এবং কাঁচ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়, ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ওসি শাহীনুর আলম আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত জানা যায়নি যে অগ্নিকাণ্ডটি পরিকল্পিত ছিল, নাকি বাসের যান্ত্রিক ত্রুটি থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাসটি প্রায় ১০ ঘণ্টা মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। এই দীর্ঘ সময় ধরে স্থির থাকা অবস্থায় যেকোনো বৈদ্যুতিক বা যান্ত্রিক সমস্যা আগুনের প্রধান কারণ হতে পারে। যদিও স্থানীয়রা ও ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বাসের ভেতরে আগুন লাগার শুরুস্থান এবং আগুনের বিস্তার কিছুটা সন্দেহজনক মনে হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের প্রায় এক ঘণ্টা সময় লেগেছে। এতে কোনো মানুষ আহত হয়নি। বাসটিতে তখন যাত্রী ছিলেন না। তবে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হওয়ায় অর্থনৈতিক ক্ষতি বড়। স্থানীয় পরিবহন মালিকরা জানিয়েছেন, এমন ধরনের অগ্নিকাণ্ড বাস ও যাত্রী সুরক্ষার জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হবে।
এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাসের মালিক ও চালকের বক্তব্য সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া যান্ত্রিক ত্রুটি বা পরিকল্পিত আগুনের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণের জন্য একটি প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ তদন্তে বাসটির বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, ইন্ধন ট্যাংক এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের মতে, মহাসড়কের পাশে পার্কিং বা অব্যবস্থাপিত গাড়ি দীর্ঘ সময় রাখার কারণে আগুনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ধরনের পরিস্থিতি প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত তদারকি ও সতর্কতা জোরদার করার প্রয়োজন রয়েছে।
তদন্তে যদি জানা যায় যে আগুন পরিকল্পিতভাবে জ্বালানো হয়েছে, তাহলে তা পরিবহন খাতে নতুন নিরাপত্তা নীতি ও জোরদার নজরদারির প্রয়োজনীয়তা আরও প্রমাণিত করবে। অন্যদিকে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আগুন লেগে থাকলে এটি স্থানীয় পরিবহন মালিকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের পরবর্তী তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ঘটনার প্রকৃত কারণ এবং দায়ীদের শনাক্ত করা হবে।