খেলাধুলা ডেস্ক
আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্স শহরের কার্লোস স্পেগাজিনি এলাকায় শুক্রবার একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে পুড়ে গেছে আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক গোলরক্ষক ফ্রাঙ্কো আরমানির বাড়ি। দেশটির সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে জানা গেছে, দুর্ঘটনার সময় আরমানি ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না। বিস্ফোরণের ফলে তার বাড়ি তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আশপাশের এলাকায় ক্ষতিকর রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়ায় তারা বাড়িতে ফিরে যেতে পারছেন না। বিস্ফোরণ এলাকাটি থেকে যাতায়াতও বন্ধ রাখা হয়েছে।
কার্লোস স্পেগাজিনি মূলত শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত। প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণটির প্রভাব কমপক্ষে ২০ মিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস, বোনায়েরেন্স পুলিশ এবং জরুরি সেবার কর্মীরা প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছেন। তবে বিস্ফোরণের সঠিক কারণ এখনও নির্ধারিত হয়নি।
দুর্ঘটনায় আহতদের স্থানীয় এজেইজা ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল এবং ক্যানিং হেলথ সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। আর্জেন্টাইন শিল্প প্রতিষ্ঠান মন্তে গ্রান্দে গ্রুপের পরিচালক কার্লোস সান্তোরো জানান, “আমরা রেড কোডে আছি। আহতদের মধ্যে অনেকেই আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছিলেন। তবে কারও জীবন বিপন্ন নয়।”
ফ্রাঙ্কো আরমানি বর্তমানে আর্জেন্টাইন ক্লাব রিভার প্লেটের হয়ে খেলছেন। দুর্ঘটনার সময় তিনি হোটেলে অবস্থান করছিলেন। জাতীয় দলের হয়ে ২০১৮ থেকে ২০২১ পর্যন্ত তিনি ১৯ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন এবং ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে এমিলিয়ানো মার্টিনেজের ব্যাকআপ গোলরক্ষক হিসেবে স্কোয়াডে ছিলেন।
বিস্ফোরণের প্রভাবে শিল্পাঞ্চলসহ আশপাশের পরিবেশে ক্ষতিকর রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এলাকায় তৎপর রয়েছে। এছাড়া, আশপাশের এলাকায় জরুরি পরিষেবা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, রাসায়নিক দূষণের কারণে এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়তে পারে।
স্থানীয় প্রশাসন ও জরুরি সেবা সংস্থা দুর্ঘটনার কারণ নির্ধারণের জন্য তদন্ত শুরু করেছে। তারা বিস্ফোরণ স্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আশপাশের জনগণকে সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে কাজ করছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও কয়েক দিনের প্রয়োজন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আর্জেন্টিনার এই বিস্ফোরণ প্রমাণ করেছে যে, শিল্পাঞ্চলে সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং জরুরি প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় প্রশাসন এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে এখনই বিস্ফোরণ এলাকার পুনর্বাসন ও পরিবেশ সুরক্ষার দিকে নজর দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।