আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইন্দোনেশিয়া গাজা উপত্যকায় প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনীর জন্য ২০ হাজার সেনাকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাজাফরি সাজামসোয়েদ্দিন শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, গাজায় পাঠানোর জন্য ইন্দোনেশিয়া একটি পূর্ণাঙ্গ শান্তিরক্ষী দল গঠন করছে। এই দলে থাকবে প্রশিক্ষিত ২০ হাজার সেনা, পাশাপাশি বেশ কয়েকজন ডাক্তার ও প্রকৌশলী। এ বাহিনী যুদ্ধবিরতির পর গাজায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও মানবিক সহায়তা প্রদানে দায়িত্ব পালন করবে।
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীও ব্রিফিংয়ে নিশ্চিত করেছেন যে, গাজায় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর উদ্যোগের জন্য দেশটি জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনুমোদনের আশ্বাস পেয়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের ‘সবুজ সংকেত’ পাওয়া এখনও বাকি রয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, আরব দেশগুলো—বিশেষ করে সৌদি আরব, জর্ডান, মিসর, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত—যদি সম্মত হয়, সেক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়া গাজা মিশনে যুক্ত হবে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি ২০২৫ সালের ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২৯ সেপ্টেম্বর পেশ করা ২০-পয়েন্টের প্রস্তাবের ভিত্তিতে, যার মধ্যে ইসরায়েল ও হামাসের সম্মতি রয়েছে। এই প্রস্তাবে যুদ্ধপরবর্তী গাজায় একটি অস্থায়ী বেসামরিক টেকনোক্র্যাট সরকার গঠন এবং উপত্যকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক বাহিনীর সদস্যরা টেকনোক্র্যাট সরকারের কাছে জবাবদিহিতা করবে।
যুদ্ধবিরতির এক মাস পেরিয়ে গেলেও টেকনোক্র্যাট সরকার গঠন এবং আন্তর্জাতিক বাহিনী কার্যকর করার বিষয়ে এখনও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর চূড়ান্ত অনুমোদন ও বিভিন্ন কূটনৈতিক সমঝোতা সাপেক্ষে এই বাহিনী কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।
ইন্দোনেশিয়ার এই উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে গাজায় স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। দেশটির পক্ষ থেকে সেনাদের প্রশিক্ষণ ও মানবিক সহায়তার প্রস্তুতি যুদ্ধবিরতির দীর্ঘস্থায়ী প্রয়োগে সহায়তা করতে পারে। তবে বাস্তবায়ন শুরুর নির্দিষ্ট সময় এখনও নির্ধারিত হয়নি।
গাজা উপত্যকায় দীর্ঘদিনের সংঘাতের কারণে মানবিক পরিস্থিতি সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রশিক্ষিত শান্তিরক্ষী বাহিনী এবং ডাক্তার ও প্রকৌশলীরা স্থানীয় পুনর্গঠন, স্বাস্থ্যসেবা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।