আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের বিহার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বিজেপি-জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের প্রার্থীরা। শুক্রবার রাতে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, ২৪২টি আসনের মধ্যে ২০২টিতে এনডিএ জোটের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বিরোধী কংগ্রেস-রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতৃত্বাধীন মহাগাঠবন্ধন জোটের প্রার্থীরা ৩৫টি আসনে জয়লাভ করেছেন।
প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী এই নির্বাচনের ফলাফল প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা বার্তায় বলেছেন, “বিহারের লাখ লাখ ভোটার, যারা মহাগাঠবন্ধন জোটের প্রার্থীদের ভোট দিয়েছেন— তাদের প্রতি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বিহারের এই ফলাফল সত্যিই বিস্ময়কর। আমরা এমন একটি নির্বাচনে জয় লাভ করতে পারিনি যা শুরু থেকেই সুষ্ঠু ছিলো না।” যদিও তিনি সরাসরি ভোট চুরির অভিযোগ তুলে ধরেননি, নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিহারের বিধানসভায় মোট আসন সংখ্যা ২৪৩টি। ভোটগ্রহণ হয়েছে দুই দফায়। প্রথম দফা অনুষ্ঠিত হয় ৬ নভেম্বর, যেখানে ১২১টি আসনে ভোট পড়ে প্রায় ৬৫ শতাংশ। দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠিত হয় ১১ নভেম্বর, ১২২টি আসনে ভোট পড়েছিল প্রায় ৬৮ শতাংশ। দুই দফা মিলিয়ে মোট ভোট অংশগ্রহণ ছিল প্রায় ৬৭ শতাংশ।
এই নির্বাচনে এনডিএ জোটের মধ্যে বিজেপি ৮৯টি আসনে জয়ী হয়েছে। জোটের প্রধান শরিক দল জেডিইউ, যার নেতৃত্বে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার রয়েছেন, ৮৫টি আসনে জয় লাভ করেছে। এছাড়া লোক জনশক্তি পার্টি ১৯টি এবং আওয়াম মোর্চা পার্টি ৫টি আসনে জয় পেয়েছে।
মহাগাঠবন্ধন জোটের ফলাফল কংগ্রেস ও আরজেডি উভয়ের জন্যই আশানুরূপ হয়নি। কংগ্রেস এবার ৬১টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল, জয় পেয়েছে মাত্র ৬টিতে। ২০২০ সালের লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করলে কংগ্রেসের ফলাফল উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। আরজেডি ১৪৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল, তার মধ্যে ২৫টি আসনে জয়ী হয়েছে। ২০২০ সালের নির্বাচনে দলটি ৭৫টি আসনে জয়লাভ করেছিল।
রাহুল গান্ধী এক্সে পোস্টে আরও উল্লেখ করেছেন, “আমাদের লড়াই সংবিধান ও গণতন্ত্রকে রক্ষার লড়াই। কংগ্রেস এবং ইনডিয়া জোট এই ভোটের ফলাফল গভীরভাবে পর্যালোচনা করবে এবং গণতন্ত্রকে রক্ষার লড়াইকে আরও কার্যকর করতে সচেষ্ট হবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিহারের এই ফলাফল কেন্দ্র ও রাজ্যের রাজনৈতিক দৃশ্যকে প্রভাবিত করবে। এনডিএ জোটের বিজয় বিজেপি ও জেডিইউ’র মধ্যে সমন্বয় ও শক্তি বৃদ্ধিকে নির্দেশ করছে। বিরোধী মহাগাঠবন্ধন জোটের দুর্বল ফলাফল আগামী নির্বাচনে তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরেছে।