খেলাধুলা ডেস্ক
শনিবার স্পেনের অ্যাথলেটিক বিলবাও স্টেডিয়ামে ফিলিস্তিন ও স্পেন ফুটবল দলের মধ্যে একটি প্রীতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে প্রায় ৫০ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত দর্শকরা ফিলিস্তিনের পতাকা এবং স্লোগান হাতে নিয়ে সমর্থন জানিয়েছেন। ম্যাচ চলাকালে দুই দলের খেলোয়াড়রা ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধের আহবান জানিয়েছেন।
ম্যাচের জন্য স্পেনের স্কোয়াড গঠিত হয়েছিল অ্যাথলেটিক বিলবাও ও রিয়াল সোসিয়েদাদ ক্লাবের ফুটবলারদের নিয়ে। ফিলিস্তিন দল গঠিত হয় উত্তর-পশ্চিম কাতালুনিয়ার ফুটবলারদের দ্বারা। উল্লেখযোগ্যভাবে, স্পেনের স্কোয়াড মূলত বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রেক্ষিতে উত্তর স্পেনের বাস্ক কান্ট্রি অঞ্চলের খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত হয়েছিল। পুরো স্টেডিয়াম ফিলিস্তিনের পতাকা এবং অঞ্চলীয় পতাকায় রঙিন ছিল, যা সমর্থকদের দৃঢ় একতার প্রতীক হিসেবে দেখা গেছে।
এপি সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এই প্রীতি ম্যাচ আয়োজন করা হয়। ম্যাচের আগে হাজারো মানুষ ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে মিছিল করেছে এবং শান্তিপূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করেছে। দর্শকরা স্টেডিয়ামে উপস্থিত থেকে উভয় দলের খেলোয়াড়দের প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছেন এবং শান্তির বার্তা ছড়িয়েছেন।
ফুটবল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার পেছনে সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাপন্থী গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে স্পেনজুড়ে বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ শুরু হয়। বিশেষ করে বিলবাও শহরে স্পেনের নাগরিকরা গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলের সাইক্লিং দলের বিপক্ষে প্রতিবাদ প্রদর্শন করেছিল। এই প্রীতি ম্যাচকে সেই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা ক্রীড়া মাধ্যমে শান্তি এবং সংহতির বার্তা প্রচারের একটি উদাহরণ।
স্পেন ও ফিলিস্তিনের খেলোয়াড়রা খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভুলে একত্রে মানবাধিকার ও সহনশীলতার বার্তা প্রচার করেছেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, অ্যাথলেটিক বিলবাও স্টেডিয়ামে এই ধরনের আন্তর্জাতিক সমর্থন প্রদর্শন ক্রীড়া কৌশল ও সামাজিক সচেতনতার সংমিশ্রণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দর্শক এবং খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণকে ক্রীড়া সমাজ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবিক বার্তা প্রচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
এই প্রীতি ম্যাচ ক্রীড়া, মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক সংহতির সংযোগ স্থাপনের একটি উদাহরণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও ফুটবল কর্তৃপক্ষ উভয় দলের সমর্থকদের নিরাপদ পরিবেশে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন। এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সম্প্রদায়ে শান্তি ও সংহতির বার্তা সম্প্রসারণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।