খেলাধুলা ডেস্ক
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট সম্প্রতি নানা অভিযোগ ও সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিশেষ করে জাতীয় নারী দলের সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলমের করা যৌন হেনস্তার অভিযোগের পর দেশে ক্রিকেটাঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। একই সময়ে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগও উঠেছিল। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জানায়, এই অভিযোগের কোনো প্রমাণ তারা খুঁজে পায়নি।
বিসিবি গত শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ১৭ সেপ্টেম্বর অনূর্ধ্ব-১৯ দল নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের জন্য বোর্ডকে চিঠি দিয়েছিল। তবে তখন বিসিবি সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিভাগ নির্বাচনী কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় তদন্ত পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। উল্লেখযোগ্য, ৬ অক্টোবর নির্বাচনের মাধ্যমে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বাধীন বিসিবির নতুন কমিটি। নতুন কমিটি গঠনের পর অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করে বোর্ড নিশ্চিত করেছে যে, নির্বাচনের সঙ্গে কোনো অনিয়ম যুক্ত নয়।
বিসিবি জানিয়েছে, তারা সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্টগুলো যাচাই করেছে এবং অনূর্ধ্ব-১৯ দলের নির্বাচনে অনিয়মের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়মমাফিক পরিচালিত হয়েছে এবং সব বিভাগই সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করেছে।
এ প্রসঙ্গে বিসিবি আরও জানিয়েছে, রিয়া আক্তার শিখা, এনএসসি নির্বাহী পরিচালক, কর্তৃক দায়েরকৃত অভিযোগগুলো সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলমের সাক্ষাৎকারে উত্থাপিত বিষয়সমূহের ওপর ভিত্তি করে গঠিত পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটির সামনে উপস্থাপন করার প্রক্রিয়া চলছে। অনুসন্ধান কমিটি বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে যাচাই ও পর্যালোচনা করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নারী ক্রিকেটে এমন ধরনের অভিযোগ এবং তার প্রতিবাদমূলক প্রক্রিয়া দেশের খেলাধুলার স্বচ্ছতা ও প্রশাসনিক কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। বিসিবি বলেছে, তারা সব ধরণের অভিযোগ মোকাবেলায় স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উল্লেখ্য, জাহানারা আলমের যৌন হেনস্তার অভিযোগের কারণে সম্প্রতি বোর্ডে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিসিবি নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট সমস্ত নথি ও সাক্ষ্য উপাদান সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এছাড়া, অনূর্ধ্ব-১৯ দল নির্বাচনের ঘটনায় কোনো অনিয়ম পাওয়া না গেলেও বিসিবি জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা আরও নিশ্চিত করার জন্য নীতি ও নিয়মাবলী কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে। এতে দেশের নারী ক্রিকেটের উন্নয়ন এবং খেলোয়াড়দের জন্য ন্যায্য প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি হবে।