আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ আগামীকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন করার খসড়া প্রস্তাবের ওপর ভোট প্রদান করবে। এই প্রস্তাব অনুযায়ী গাজায় ‘বোর্ড অব পিস’ নামে একটি অন্তর্বর্তী শাসন কাঠামো গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে, যার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই অন্তর্বর্তী শাসন কাঠামোর মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত। খসড়া প্রস্তাবে ভবিষ্যতে একটি সম্ভাব্য ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রস্তাবে একটি ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স (আইএসএফ)’ গঠনের অনুমোদন চাওয়ার কথাও উল্লেখ রয়েছে। মিশরের নেতৃত্বে এই আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করা হবে এবং তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, আজারবাইজান ও সৌদি আরব সৈন্য পাঠাবে। বাহিনীটি ইসরায়েল এবং নবগঠিত ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে গাজার সীমান্ত নিরাপত্তা ও নিরস্ত্রীকরণ কার্যক্রমে ভূমিকা রাখবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিশর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, জর্দান ও তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম-প্রধান দেশ দ্রুত এই প্রস্তাব গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, প্রস্তাব পাশ না হলে হামাসের পুনরুত্থানের ঝুঁকি রয়েছে এবং ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষ পুনরায় শুরু হতে পারে।
অন্যদিকে, রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের কাছে একটি পাল্টা খসড়া প্রস্তাব পাঠিয়েছে। রাশিয়ার প্রস্তাবে ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন ‘বোর্ড অব পিস’ গঠন বা আন্তর্জাতিক বাহিনী তাৎক্ষণিক মোতায়েনের অনুমোদন নেই। তবে সেখানে যুদ্ধবিরতি সমর্থনের পাশাপাশি দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
মানবিক প্রেক্ষাপট হিসেবে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর গাজায় সংঘর্ষে ৬৯ হাজার ১৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৯৮ জন আহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করে জানাচ্ছেন, শান্তি প্রস্তাব কার্যকর না হলে সেক্টরের ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীর উপর আরও মানবিক সংকট তৈরি হতে পারে।
ভোটের ফলাফল এবং নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত গাজার ভবিষ্যত শান্তি প্রক্রিয়া, আন্তর্জাতিক শান্তি সংস্থাগুলোর ভূমিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাব্য বাস্তবায়নকে গুরুত্বপূর্ণভাবে প্রভাবিত করবে।