জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২৮ নভেম্বর ভারতের চেন্নাই ও মাদুরাইয়ে শুরু হতে যাওয়া অ-২১ হকি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার জন্য আজ (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ জাতীয় দল দেশ ছেড়েছে। প্রথমবারের মতো কোনো হকি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের কন্টিনজেন্ট ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ভারতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এই বিশ্বকাপ দলের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছেন ইউএস বাংলা।
বাংলাদেশ দল এ বছর প্রথমবারের মতো অ-২১ বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে। দলটির সঙ্গে আজ হেড কোচ ডাচ নাগরিক আইকম্যান, ম্যানেজার লে. কর্নেল রিয়াজুল হাসান (অব.) এবং খেলোয়াড় মেহেদী হাসান যেতে পারেননি। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল হাসান জানান, হেড কোচ আইকম্যানের মা মৃত্যুবরণ করায় তিনি পারিবারিক কাজে হল্যান্ড যাচ্ছেন এবং ২৪ নভেম্বর ভারতে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন। ম্যানেজার হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নিজেই দায়িত্ব পালন করছেন। খেলোয়াড় মেহেদী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় দলটির সঙ্গে যেতে পারেননি।
টুর্নামেন্ট শুরুর প্রায় দশ দিন আগে বাংলাদেশ দল ভারতে পৌঁছাবে এবং সেখানে চিলি ও সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা রয়েছে। হেড কোচের অনুপস্থিতিতে সহকারী কোচ ও অন্যান্য কর্মকর্তা দলের প্রস্তুতি তত্ত্বাবধানে থাকবেন। সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল হাসান বলেন, কোচিং স্টাফদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার কারণে কোনো সমস্যা হবে না।
বাংলাদেশ অ-২১ হকি দল বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। হকি ফেডারেশন দীর্ঘমেয়াদী অনুশীলনের পাশাপাশি উন্নত মানের ডাচ কোচের সহায়তা নিয়েছে। মালয়েশিয়ায় চারটি প্রস্তুতি ম্যাচের আয়োজনও করা হয়েছিল। প্রথমে ফেডারেশন পরিকল্পনা করেছিল দলের একটি অংশ সুইজারল্যান্ডে পাঠানোর, তবে ভিসা জটিলতার কারণে ইউরোপ সফর হয়নি।
ভারতে পৌঁছানোর পর দলকে স্থানীয় ভেন্যু, আবহাওয়া এবং প্রস্তুতি ম্যাচের পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য ১০ দিন আগে রওনা দেওয়া হয়েছে। দলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশ্বকাপের জন্য এই প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেবে।
বাংলাদেশের প্রথমবারের অ-২১ বিশ্বকাপ অংশগ্রহণে দেশের হকি খেলার জন্য এটি একটি নতুন অধ্যায়। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও আন্তর্জাতিক প্রস্তুতির মাধ্যমে দল আশা করছে প্রতিযোগিতামূলক মান বজায় রাখতে এবং অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবে। দলটি বিশ্বকাপে পাকিস্তান, চিলি ও সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই অভিজ্ঞতা আগামীতে বাংলাদেশ হকির অ-২১ দলকে আরও শক্তিশালী ও দক্ষ করে তুলবে বলে হকি ফেডারেশনের কর্মকর্তারা মনে করছেন।
প্রসঙ্গত, ফেডারেশন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা অনুসারে খেলোয়াড়দের শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতির ওপর জোর দিয়েছে। আন্তর্জাতিক স্তরে দলীয় সমন্বয়, কৌশলগত খেলা এবং মানসিক চাপ মোকাবেলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের মাধ্যমে খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নিজেদের দক্ষতা যাচাই করতে পারবে, যা ভবিষ্যতে জাতীয় দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, দলের সঙ্গে কোচ বা ম্যানেজারের আংশিক অনুপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও ফেডারেশন নিশ্চিত করেছে যে, অভিজ্ঞ সহকারী কর্মকর্তা ও স্টাফদের উপস্থিতিতে দলের প্রস্তুতি পরিকল্পনায় কোনো বাধা সৃষ্টি হবে না। বিশ্বকাপের এই অভিজ্ঞতা খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ারে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং দেশের হকি খেলার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।