জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
আগামী বাংলাদেশ-ভারত ফুটবল ম্যাচে ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন বিতর্কিত ফিলিপাইনি রেফারি ক্লিফোর্ড পোস্তানিস। বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকরা বিশেষভাবে নজর রাখছেন এই রেফারির ওপর, যিনি গত জুনে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে ৯৩তম মিনিটে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। ওই ম্যাচে বাংলাদেশের ফয়সাল আহমেদ ফাহিমকে ডিবক্সের ভেতরে স্লাইডিং ট্যাকেল করা হয়, কিন্তু পেনাল্টি না দেওয়া হয়। যদি সেই পেনাল্টি দেওয়া হতো, ম্যাচের ফলাফল বদলে যেতে পারত।
ক্লিফোর্ড পোস্তানিস ২০১৪ সাল থেকে ফিলিপাইনে ফিফা রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২৫ সালে ফিলিপাইনের ফিফা রেফারি ব্যাজধারীদের মধ্যে তিনি সবচেয়ে সিনিয়র রেফারি। তার সঙ্গে দুইজন সহকারী রেফারি—নানোলা ক্রিজমার্ক (২০১৭ সাল থেকে ফিফা সহকারী রেফারি) এবং লাচিচা জিওভানি (২০১৮ সাল থেকে ফিফা সহকারী রেফারি)—ও মাঠে থাকবেন। এই তিনজনই সরাসরি সিঙ্গাপুর ম্যাচেও দায়িত্বে ছিলেন।
ম্যাচের পর রেফারিদের ভুল-ত্রুটি বা পর্যবেক্ষণের জন্য একজন অ্যাসেসর থাকেন। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে অ্যাসেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জর্ডানের নাসের মোস্তফা। তিনি সাবেক ফিফা রেফারি এবং ম্যাচের রেফারিদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন। ম্যাচের সার্বিক ব্যবস্থাপনা দায়িত্বে থাকবেন মিয়ানমারের সি থু উইন, যিনি ম্যাচ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চতুর্থ রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন দক্ষিণ এশিয়ার শ্রীলঙ্কার কাশুন লাকমাল। সম্প্রতি তিনি ১৩ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচে রেফারিং করেছেন। চতুর্থ রেফারি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সরাসরি মাঠের খেলায় প্রভাব ফেলে। পূর্বে সিঙ্গাপুর ম্যাচে চতুর্থ রেফারির কারণে কিছু বিলম্ব ও খেলোয়াড় পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সমালোচনা দেখা গিয়েছিল।
ফুটবল বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ক্লিফোর্ড পোস্তানিসের নেতৃত্বে ম্যাচ পরিচালনায় আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও অতীত বিতর্কের কারণে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে উত্তেজনা বাড়তে পারে। এ ছাড়া, মাঠে রেফারিংয়ের ভুল-ত্রুটি প্রতিরোধে অ্যাসেসর ও ম্যাচ কমিশনারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে রেফারির অভিজ্ঞতা, সহকারী রেফারির কার্যক্রম এবং অ্যাসেসর ও ম্যাচ কমিশনারের পর্যবেক্ষণ একত্রে নিশ্চিত করবে ম্যাচের স্বচ্ছতা। তবে সমর্থকরা অতীতের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন এবং ম্যাচের প্রতি তাদের নজর থাকবে। এই ম্যাচটি বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য আন্তর্জাতিক মানের ম্যাচ হওয়ায় এর ফলাফল ও রেফারিংয়ের প্রভাব আগামী খেলাধুলা কৌশল এবং জাতীয় দলের প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
ম্যাচের প্রারম্ভিক প্রস্তুতি অনুযায়ী, রেফারি, সহকারী রেফারি, অ্যাসেসর এবং ম্যাচ কমিশনার মাঠে উপস্থিত থেকে ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্তের উপর নজর রাখবেন। এতে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা, নিয়ম অনুযায়ী খেলা এবং খেলোয়াড় পরিবর্তনের সময়সীমা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তরা আশা করছেন, অতীতের বিতর্কিত পরিস্থিতি পুনরায় সৃষ্টি হবে না এবং ম্যাচের ফলাফল ক্রীড়ানীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।