জেলা প্রতিনিধি
নীলফামারীর উত্তরা এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের (ইপিজেড) সোনিক বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানায় দুই শ্রমিকের ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে শ্রমিকরা মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিক্ষোভ করেছে। তারা ছাঁটাই বন্ধসহ ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করেছে।
সকাল ১০টার দিকে উত্তরা ইপিজেডের প্রধান ফটক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে শ্রমিকরা। মিছিলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়, যেখানে শ্রমিকরা অবস্থান নেয়। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, কোনো কারণ ছাড়াই কারখানার দুই শ্রমিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তারা পরিবারিক সমস্যায় ছুটি নেয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য, দুপুরের খাবারের সময় বৃদ্ধি, নির্ধারিত সময়ে ছুটি প্রদানের নিশ্চয়তা এবং দ্রুত ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের চাকরিতে পুনঃস্থাপনের দাবিও জানিয়েছেন।
সনিক বাংলাদেশ লিমিটেডের একজন শ্রমিক আলামিন ইসলাম বলেন, “কোনো কারণ ছাড়া আমাদের দুই সহকর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এভাবে সবাইকে ইচ্ছামতো ছাঁটাই করা হলে আমরা তা মেনে নিতে পারব না। আমাদের সহকর্মীদের চাকরিতে পুনঃস্থাপনসহ অন্যান্য দাবিও মানা উচিত।”
উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার জানান, সোনিক বাংলাদেশ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ নিজস্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই শ্রমিককে অব্যাহতি দিয়েছে। এরপর অন্যান্য শ্রমিকরা এই সিদ্ধান্ত না মেনে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, “কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবিগুলো বিবেচনায় নিয়েছে। তবে শ্রমিকরা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর সাঈদ জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শ্রমিকেরা অবস্থান করছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং সব কিছু স্বাভাবিক রয়েছে।
কর্মচারীদের এই বিক্ষোভ নীতি ও কর্মপরিবেশের উন্নয়নের পাশাপাশি শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পরিস্থিতি শিল্প কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রমে প্রভাব ফেলতে পারে এবং শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করা জরুরি।
শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে ছাঁটাই বন্ধ করা, কর্মঘণ্টা ও ছুটির সময়নির্ধারণে স্বচ্ছতা, নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, এবং অন্যান্য সামাজিক ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত সুবিধা। ইপিজেড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চলমান আলোচনা ও সমাধান প্রক্রিয়া এই পরিস্থিতির প্রভাব কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিকদের এই বিক্ষোভ স্থানীয় অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে উৎপাদনশীলতা ও রপ্তানি কার্যক্রমে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের সমন্বিত আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত এবং কার্যকর সমাধান না হলে চলমান আন্দোলন আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।