জেলা প্রতিনিধি
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কামালদী এলাকায় মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের একটি অংশে গাছ ফেলে যান চলাচল অবরোধ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই এলাকার যানবাহন চলাচল কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সকাল ৭টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোরের দিকে আমগ্রাম ব্রিজ ও কামালদী ব্রিজের মধ্যবর্তী স্থানে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা মহাসড়কের উপর বড় একটি গাছ কেটে ফেলেন। ঘটনার সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এ সময় সাধারণ যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার মো. ইসমাইল হোসেন জানান, খবর পেয়ে তারা ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করেন। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টার পর সকাল ৭টার দিকে সড়কের ওপর থেকে গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। তিনি বলেন, গাছটি মহাসড়কের পাশ থেকে কেটে সরাসরি সড়কের ওপর ফেলা হয়েছিল।
মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভোরের দিকে মহাসড়কে গাছ ফেলা হয় এবং পরে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে সড়ক পরিচ্ছন্ন করে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর অংশে এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। এর আগে রবিবার (১৬ নভেম্বর) ভোরে ভাঙ্গাব্রিজ থেকে ভূরঘাটার মধ্যবর্তী প্রায় ৮টি স্থানে মোট ১২টি বড় গাছ ফেলে যান চলাচল বন্ধ করা হয়। ওই সময় মহাসড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয় এবং টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও মিছিলের পর পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের প্রচেষ্টায় প্রায় চার ঘণ্টার পর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মহাসড়কের নিরাপত্তা জোরদার করেছে। তারা বলছে, যান চলাচলের বিঘ্ন এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে, যা সাধারণ যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি করছে।
মাদারীপুরের জনগণ ও পরিবহন ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত থাকলে অর্থনৈতিক ক্ষতি ছাড়াও সাধারণ মানুষের যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়বে। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয়ভাবে রাউন্ড দ্য ক্লক নজরদারি চালাচ্ছে।
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক দেশের গুরুত্বপূর্ণ ন্যাশনাল হাইওয়ে হওয়ায় যানবাহনের নিরাপদ ও অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা প্রশাসনের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ সতর্কতা অবলম্বন করে, দুর্ঘটনা ও যানজট এড়াতে প্রতিনিয়ত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।