ক্রীড়া প্রতিবেদক
২০০৫ সালে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক করা মুশফিকুর রহিম দীর্ঘ ২০ বছরের ক্যারিয়ারে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলা ক্রিকেটার হিসেবে সাফল্য অর্জন করেছেন। আগামীকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টেস্ট ম্যাচ দিয়ে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১০০টি টেস্ট খেলবেন।
মুশফিকের এই মাইলফলক দেশের ক্রিকেট ভক্ত ও বর্তমান খেলোয়াড়দের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্সও মুশফিকের দীর্ঘস্থায়ী পেশাদারিত্ব ও ধারাবাহিক পারফরম্যান্সকে তার ‘কিংবদন্তি’ মর্যাদার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আজ একটি সংবাদ সম্মেলনে সিমন্স বলেন, “মুশফিক অবশ্যই একজন কিংবদন্তি। টেস্ট ক্রিকেটে তার মতো বহু ডাবল সেঞ্চুরি খুব কম খেলোয়াড় করেছে। প্রায় ২০ বছর ধরে যে ধারাবাহিকতা ও পারফরম্যান্স দেখিয়েছে, তা তাকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।” তিনি আরও বলেন, “তার সাফল্যের মূলমন্ত্র হচ্ছে পেশাদারিত্ব। নিজেকে পরিচালনা করা, খেলার উন্নতির জন্য পরিকল্পনা করা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফল হওয়ার জন্য কাজ করা—এই বিষয়গুলো তাকে দীর্ঘ সময় ধরে সাফল্য ধরে রাখতে সাহায্য করেছে।”
সিমন্স মুশফিকের অভিজ্ঞতা তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য শিক্ষণীয় বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “মুশফিকের প্রতি সবার অগাধ সম্মান রয়েছে। খেলোয়াড়রা তার কথায় মনোযোগ দিয়ে শোনে এবং তার অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখে। তিনি নিয়মিত তরুণদের সঙ্গে ব্যাটিং ও খেলার কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন, যা দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
মিরপুরে অনুষ্ঠিতব্য টেস্টে ১০০টি ম্যাচ খেলার মাইলফলক ছুঁতে চলা মুশফিকের অর্জন কেবল তার ব্যক্তিগত কৃতিত্ব নয়, বরং বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সিমন্স আশা প্রকাশ করেছেন যে মুশফিকের এই অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্ব তরুণ খেলোয়াড়দের মানসিকতা ও খেলার ধরনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
মুশফিকের ক্যারিয়ার জুড়ে পাওয়া সাফল্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো একাধিক ডাবল সেঞ্চুরি, দলের জয় নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ধারাবাহিক পারফরম্যান্স। এই দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্স তাকে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক অনন্য মর্যাদা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা ও সহকর্মী খেলোয়াড়রা মুশফিকের এই মাইলফলক উদযাপন করবেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মুশফিকের অভিজ্ঞতা তরুণ খেলোয়াড়দের মানসিক ও কৌশলগতভাবে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ১০০টি টেস্ট খেলার ইতিহাস গড়ার পাশাপাশি মুশফিক বাংলাদেশের ক্রিকেটে স্থায়ী প্রভাব রেখে যাচ্ছেন, যা ভবিষ্যতের প্রজন্মের খেলোয়াড়দের জন্য এক দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।
মিরপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই ম্যাচ কেবল মুশফিকের জন্য নয়, পুরো দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য একটি স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। এই মাইলফলক বাংলাদেশ ক্রিকেটের ধারাবাহিক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক মান অর্জনের পথকে আরও সুদৃঢ় করবে।