জাতীয় ডেস্ক
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) আশা প্রকাশ করেছেন যে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে পারে। তিনি এই মন্তব্য করেন সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার অফিসকক্ষে বাংলাদেশের সাথে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজকে সাক্ষাৎ করার সময়।
বৈঠকে দুইপক্ষ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ, সার্বিক প্রস্তুতি, বন্দি প্রত্যর্পণ, সাইবার ক্রাইম, এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এ সময় দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোও আলোচনার বিষয়বস্তু হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জার্মান রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান এবং উল্লেখ করেন, জার্মানি ও বাংলাদেশ দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু। তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন যে, অদূর ভবিষ্যতে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
নির্বাচনের তারিখ এবং সময় ও প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে নির্দিষ্ট দিন ও তারিখ নির্ধারণের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।” তিনি আরও জানান, নির্বাচন কমিশন যেই তারিখ ঘোষণা করুক না কেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
শেখ হাসিনার রায় পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতের জিজ্ঞাসার উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ছোটখাটো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ। যদি কেউ আইন-শৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটাতে চায়, তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।
অপরাধের মাত্রা নিয়ে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধের হার বৃদ্ধি পায়নি এবং এটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। তিনি জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারছেন।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান এবং জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন আঞ্জা কেরস্টেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ জাতীয় বৈঠকগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, নির্বাচনী প্রস্তুতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দৃঢ়তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি ও সমন্বয় নিশ্চিত করা সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সরকারের এই ধরনের তথ্যপ্রকাশ এবং বৈঠক আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের নীতি ও অবস্থানকে দৃঢ়ভাবে তুলে ধরে।
বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের সময়সূচি, নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। পাশাপাশি, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণের অবস্থা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হচ্ছে।