খেলাধুলা ডেস্ক
ফ্রান্সের লিলেতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রস্তুতি ম্যাচে ব্রাজিল ও তিউনিসিয়ার মধ্যকার সংবেদনশীল প্রতিযোগিতা ১-১ সমতায় শেষ হয়েছে। ব্রাজিল ম্যাচে ৭৩ শতাংশ বলের দখল রাখলেও কার্যকর ধার দেখাতে পারেনি, যা বিশ্বকাপের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কোচ কার্লো আনচেলত্তি ও দলের জন্য নতুন ভাবনার জন্ম দিয়েছে।
ম্যাচের ২৩ মিনিটে তিউনিসিয়া অগোছালো খেলার সুযোগ নিয়ে এগিয়ে যায়। হাজেম মাস্তুরি ডি-বক্সে সতীর্থের পাস গ্রহণ করে শট নিয়ে জালে বল জড়ান। বিরতির আগে ব্রাজিল সমতা ফিরিয়ে আনে। ৪৪ মিনিটে তিউনিসিয়ার বক্সে হ্যান্ডবল হলে ব্রাজিল পেনাল্টি পায়, যা এস্তেভাও উইলিয়ানের শক্তিশালী শটে রূপান্তরিত হয়। এস্তেভাও এই গোলের মাধ্যমে জাতীয় দলের সর্বশেষ ছয় ম্যাচে পঞ্চম গোল সম্পন্ন করেন এবং চলতি বছরে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে নাম লেখান।
ম্যাচের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ব্রাজিল ২২টি শট নেয়, তবে এর মধ্যে লক্ষ্যভেদ মাত্র তিনটি। অন্যদিকে, তিউনিসিয়া সাতটি শট নেয়, যার মধ্যে দুটি লক্ষ্যে পৌঁছায়। ব্রাজিলের শট লক্ষ্যহীন ও লক্ষ্যচ্যুত ছিল, যা দলকে গোল করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বিশেষ করে লুকাস পাকেতার একটি পেনাল্টি মিসও দলের জন্য হতাশাজনক মুহূর্ত হিসেবে রইল।
ম্যাচ চলাকালীন ব্রাজিলের রক্ষণে ক্রমাগত চাপে থাকা সত্ত্বেও ধারাবাহিক আক্রমণ তৈরি করতে পারছিল না। রদ্রিগো ও ভিনিসিয়ুসরা বেশ কিছু আকর্ষণীয় সুযোগ তৈরি করেন। রদ্রিগোর ফ্রি-কিক শট কর্নারের মাধ্যমে প্রতিহত হয়। দলের ডিফেন্ডার এডার মিলিটাও ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়লে কোচ আনচেলত্তির উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। এর আগে গ্যাব্রিয়েল মাগালায়েসও ইনজুরির কারণে দলের বাইরে ছিলেন।
ব্রাজিলের ম্যাচে আক্রমণাত্মক মানসিকতা বজায় থাকলেও প্রতিপক্ষের রক্ষণ শক্তি তাঁদের গোল করার সম্ভাবনা সীমিত করে। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ভিটর রকিকে প্রথমবারের মতো খেলার সুযোগ দেওয়া হয়। ৭৬ মিনিটে ব্রাজিল আবারও পেনাল্টি পান, তবে অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার এটি মিস করেন।
বিশ্বকাপের আগে এই প্রস্তুতি ম্যাচটি ব্রাজিলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দলের আক্রমণ ও রক্ষণে দেখা অনিয়ম এবং ইনজুরি উদ্বেগের বিষয় হিসেবে থেকে যাচ্ছে। মার্চের আগে ব্রাজিলের আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ নির্ধারিত নেই। এই সময়ের মধ্যে খেলোয়াড়দের ফিটনেস ও কৌশলগত সামঞ্জস্য নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বিশেষ করে এস্তেভাও উইলিয়ানের উজ্জ্বল পারফরম্যান্স এবং রদ্রিগো-ভিনিসিয়ুসদের আক্রমণমূলক প্রচেষ্টা দলের জন্য ইতিবাচক দিক হিসেবে বিবেচিত হলেও পেনাল্টি মিস ও লক্ষ্যচ্যুত শট বিশ্বকাপের প্রস্তুতি আরও সমন্বিত করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। ইনজুরি সমস্যাও কোচ আনচেলত্তির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে, যা ক্লাব পর্যায়ের ম্যাচগুলোর উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
ম্যাচটি বিশ্বকাপের আগে ব্রাজিলের কৌশলগত শক্তি ও দুর্বলতা পরীক্ষা করার গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে কাজ করেছে। দলের ধারাবাহিকতা, রক্ষণ ও আক্রমণের সমন্বয় এবং মূল খেলোয়াড়দের ফিটনেস নিশ্চিত করা বিশ্বকাপে সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।