জাতীয় ডেস্ক
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বুধবার সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার এবং সহযোগিতাপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করা প্রতিটি দলের দায়িত্ব এবং নির্বাচন কমিশন দেশের জনগণকে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ভোট প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সিইসি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচনের নিরাপত্তা রক্ষা করলেও ভোটের মূল সাফল্য নির্ভর করে রাজনৈতিক দলগুলোর সতর্ক ও দায়িত্বশীল অংশগ্রহণের উপর। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি আন্তরিকভাবে আচরণবিধি অনুসরণ করে এবং ভোটারদের উৎসাহিত করে, তাহলে কমিশনকে অতিরিক্ত চাপ নিতে হয় না।
নির্বাচন ভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে সিইসি এ কথাগুলো বলেন। তিনি ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধিতে দলগুলোর সহযোগিতা কামনা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন, প্রতিটি দল তাদের কর্মীদের মাধ্যমে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করবে।
সিইসি উল্লেখ করেন, শপথ গ্রহণের পর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চললেও নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ আলাপ-আলোচনা কিছুটা বিলম্বিত হয়েছিল। এর পেছনে কারণ হিসেবে তিনি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের (ইআরএসসি) কার্যক্রম ও জাতীয় নেতাদের ব্যস্ততা উল্লেখ করেন। তবে, কমিশনের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরই নির্বাচন বিষয়ক আলোচনা শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, শুধু নির্বাচন কমিশনই নয়, সব রাজনৈতিক দলই একটি গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আচরণবিধি চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংস্থার লিখিত মতামত পর্যালোচনা করা হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আচরণবিধি তৈরি করা সহজ, কিন্তু তা অনুসরণ করাই মূল চ্যালেঞ্জ।
সিইসি আরও বলেন, গত এক দশক পনেরো বছরে ভোটারদের মধ্যে ভোট-বিমুখতা দেখা দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক নেতাদের সরাসরি তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে জনগণকে ভোট দিতে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভোটারের সংখ্যা যথাসম্ভব বৃদ্ধি পাবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাইতেও বড় ভূমিকা রাখে রাজনৈতিক দল ও তাদের প্রার্থীরা। অতীতে এর নজিরও দেখা গেছে। তিনি বলেন, সকল রাজনৈতিক দল, ভোটার এবং কমিশনকে একসাথে কাজ করতে হবে যাতে দেশের জনগণকে সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব হয়।
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের এই আহ্বান আসন্ন নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনা করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা এবং নাগরিক অংশগ্রহণকে আরও সক্রিয় করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।