আন্তর্জাতিক ডেস্ক
হোয়াইট হাউসে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নিয়েছেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের তিক্ততা কাটিয়ে এটিই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের দ্বিতীয় জনসম্মুখে প্রকাশ্য উপস্থিতি।
বছরের শুরুতে দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প মাস্ককে ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন। মাস্ককে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ (ডিওজিই) নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং ফেডারেল সরকারের ব্যয় কমানোর কাজের তদারকি দেওয়া হয়। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের মধ্যে সম্পর্কের শীতলতা দেখা দেয়। মাস্ক ট্রাম্পের কর ও ব্যয় নীতি ‘অর্থনৈতিকভাবে বেপরোয়া’ বলে সমালোচনা করেন এবং নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনার কথা জানান। জবাবে ট্রাম্প হুমকি দেন যে, মাস্কের কোম্পানিগুলোকে সরকারের ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই দ্বন্দ্ব এবং মাস্কের রাজনৈতিক বক্তব্য তার ব্যবসায়িক ব্র্যান্ড, বিক্রয় এবং শেয়ারদরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। এর পর থেকে দু’জনকে খুব কমই একসঙ্গে প্রকাশ্যে দেখা গেছে। সর্বশেষ দেখা যায় গত সেপ্টেম্বর মাসে রক্ষণশীল কর্মী চার্লি কার্কের স্মরণসভায়, যেখানে মাস্ক ট্রাম্পের সঙ্গে হাত মেলান।
সৌদি যুবরাজের যুক্তরাষ্ট্র সফরের অংশ হিসেবে এই নৈশভোজে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এবং এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াং। বিশ্লেষকদের মতে, মাস্কের উপস্থিতি তার ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের পুনঃস্থাপন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার সমাধানের ইঙ্গিত বহন করে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর মাস্ক সক্রিয়ভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় অর্থায়ন করেছিলেন এবং তার প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। মাস্কের প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক নীতিগুলোর সমালোচনা এবং রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে সম্পর্কের শীতলতা সৃষ্টি হলেও সম্প্রতি নৈশভোজে তার অংশগ্রহণ দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক মহলে এই পুনর্মিলনের প্রভাব বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। মাস্কের উপস্থিতি তার ব্যবসায়িক ব্র্যান্ড এবং রাজনৈতিক ভাবমূর্তির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া, সৌদি যুবরাজের সঙ্গে মার্কিন নেতাদের সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রচেষ্টায় এই ধরনের সমন্বয়ক বৈঠকগুলোর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে।
নৈশভোজের পর্যালোচনায় জানা যায়, এমন উচ্চপর্যায়ের সভা আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং ব্যবসায়িক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মাস্ক এবং ট্রাম্পের পুনর্মিলন ভবিষ্যতে মার্কিন নীতি, কর নীতি এবং বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এছাড়া, সৌদি যুবরাজের যুক্তরাষ্ট্র সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও বৈশ্বিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।