বিনোদন ডেস্ক
ছোট পর্দার অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত সক্রিয় থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে নতুন ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। একটি ব্যক্তিগত অনুভূতি তুলে ধরে তিনি জানিয়েছেন, বয়স কম হলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কনটেন্ট প্রস্তুত ও প্রকাশের চাপ তাকে ক্লান্ত করে তুলছে।
সম্প্রতি নিজের সামাজিক প্ল্যাটফর্মে দেওয়া একটি পোস্টে সাদিয়া জানান, কয়েক মাস ধরে তোলা বহু ছবি ও ভিডিও তার কাছে জমে আছে। তিনি লিখেন, ফেব্রুয়ারি থেকে নানা সময় ধারণ করা এসব কনটেন্ট প্রকাশের পরিকল্পনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা আর করা হয়নি। এখন আর সেগুলো পোস্ট করার আগ্রহও অনুভব করছেন না।
অভিনেত্রী ব্যাখ্যা করেন, একটি ছবি বা ভিডিও প্রকাশের আগে তা বাছাই, সম্পাদনা এবং উপযুক্ত সঙ্গীত নির্বাচন করতে হয়—যা সময়সাপেক্ষ এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। তার ভাষায়, কম বয়স হওয়া সত্ত্বেও কাজগুলো কখনো কখনো অতিরিক্ত চাপের মতো মনে হয়। তিনি অনুসারীদের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, একই পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা কি অন্যদেরও হয় কিনা।
পোস্টে সাদিয়া আরও উল্লেখ করেন, কনটেন্ট প্রকাশের ক্ষেত্রে কেবল ছবি বা ভিডিও সাজানোই নয়, সেগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ক্যাপশন ভাবতেও আলাদা সময় ও মনোযোগ প্রয়োজন হয়। তিনি জানান, এই বিষয়টিও তার প্রকাশনা-সংক্রান্ত চাপকে বাড়িয়ে তোলে, যা শেষ পর্যন্ত অনীহা তৈরি করছে।
তার এই অভিজ্ঞতা জানানো পোস্টে বেশ কয়েকজন অনুসারী মন্তব্যের মাধ্যমে নিজেদের অনুভূতি শেয়ার করেছেন। কেউ বলেছেন, কনটেন্ট সম্পাদনা বা সঙ্গীত বাছাই করতে গিয়ে ক্লান্তি চলে আসে এবং একসময়ে আর কিছুই ভালো লাগে না। অন্য একজন মন্তব্য করেন, মানসিক অবস্থার পরিবর্তনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকার আগ্রহও কমে যায়।
সাদিয়া আয়মান সম্প্রতি ওয়েব সিরিজে কাজ করে আলোচনায় আসেন। ‘তাকদীর’ সিরিজে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এবং এরপর নতুন প্রজন্মের দর্শকের কাছে দ্রুত পরিচিত নাম হয়ে ওঠেন। অভিনয়ের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত সক্রিয় উপস্থিতি তার জনপ্রিয়তার একটি বড় অংশ। তাই সেখানে কনটেন্ট প্রকাশ নিয়ে তার ব্যক্তিগত অনুভূতি অনেক অনুসারীর কাছেই আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত উপস্থিতি বজায় রাখা এখন শুধু তারকা ব্যক্তিত্বদের জন্যই নয়, সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্যও এক ধরনের অতিরিক্ত চাপ তৈরি করে। ছবি ও ভিডিও তৈরি, সাজানো, সম্পাদনা এবং দর্শকের প্রত্যাশা অনুযায়ী উপস্থাপন—এসব বিষয় মানসিক চাপ বাড়াতে পারে। বিনোদন অঙ্গনের অনেকেই পূর্বে এমন চাপ অনুভব করার কথা জানিয়েছেন। ফলে সাদিয়ার অভিজ্ঞতাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের প্রচলিত চাপের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সাম্প্রতিক সময়ে তারকাদের মধ্যে ব্যক্তিগত জীবনের চাপ, সময় ব্যবস্থাপনা এবং মানসিক সুস্থতার কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে কিছুটা দূরে সরে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যদিও সাদিয়া আয়মান প্রকাশ্যে কোনো বিরতি নেওয়ার কথা জানাননি, তার বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে নিয়মিত কনটেন্ট প্রকাশের চাপ তাকে কিছুটা ক্লান্ত করে তুলেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার এ ধরনের খোলামেলা অভিব্যক্তি দর্শক ও অনুসারীদের সঙ্গে যোগাযোগকে আরও ঘনিষ্ঠ করে তোলে। অনেকেই মন্তব্যে জানান, তার অভিজ্ঞতা তাদের নিজের দৈনন্দিন অনুভূতির সঙ্গে মিলে যায়। এসব প্রতিক্রিয়া প্রমাণ করে যে কনটেন্ট তৈরি ও প্রকাশের চাপ এখন অনেকের জন্যই পরিচিত বিষয়, যা ডিজিটাল যুগে এক সাধারণ বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।