1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যেও শিশু হতাহতের উদ্বেগজনক বৃদ্ধি

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৩৫ বার দেখা হয়েছে

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গাজা উপত্যকায় ঘোষিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার পরও শিশু হতাহতের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। গত এক মাসে অন্তত ৬৭ জন ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে বলে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানায়। শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মুখপাত্র রিকার্ডো পিরেস এই তথ্য উপস্থাপন করেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির পরিবেশ বজায় থাকলেও বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনাগুলো সামগ্রিক মানবিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

সংবাদ সম্মেলনে পিরেস জানান, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক নবজাতক কন্যাশিশুর মৃত্যু হয়। এর আগের দিন গাজার বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত হামলায় আরও সাত শিশু নিহত হয়েছে। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের প্রাণহানির ঘটনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা স্পষ্ট করে তুলছে।

গত ১১ অক্টোবর যুদ্ধবিরতির প্রথম পূর্ণ দিনের পর থেকে সহিংসতার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে বলে প্রত্যাশা করা হয়েছিল। তবে ইউনিসেফের তথ্যে দেখা যায়, বাস্তবে শিশুদের ওপর হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা বন্ধ হয়নি। মুখপাত্র পিরেস বলেন, প্রতিটি casualty কেবল সংখ্যা নয়; প্রতিটি শিশুর মৃত্যুর পেছনে রয়েছে একটি পরিবার, ভবিষ্যৎ এবং জীবনের স্বপ্ন, যা সহিংসতার কারণে মুহূর্তেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, এই বাস্তবতা গাজার মানবিক পরিস্থিতিকে আরও গভীর সংকটে ফেলছে।

ইউনিসেফের মূল্যায়ন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সামরিক অভিযানে গাজা উপত্যকায় প্রায় ৬৪ হাজার শিশু নিহত ও আহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাটি জানায়, দীর্ঘমেয়াদি সংঘাত, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, পর্যাপ্ত আশ্রয়ের অভাব এবং বেসামরিক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতির কারণে শিশুদের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে। সংস্থাটির মতে, যুদ্ধবিরতি কোনো পর্যায়েই শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়নি।

গাজার চলমান সংকট আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস, সীমিত চিকিৎসা সরঞ্জাম, বিদ্যুৎবিহীন হাসপাতাল এবং নিরাপদ আশ্রয়ের অভাব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। শিশুদের একটি বড় অংশ অপুষ্টি, পানি সংকট এবং চিকিৎসা সেবার অভাবে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এসব পরিস্থিতি যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এবং মানবিক সহায়তা সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, গাজায় পুনর্বাসন, স্বাস্থ্যসেবা পুনর্গঠন এবং নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত না হলে শিশুদের জীবনঝুঁকি আরও বাড়বে। দীর্ঘসময় ধরে সহিংসতার মুখোমুখি হওয়া শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও গভীর প্রভাব পড়ছে। তাদের অনেকেই পরিবার হারিয়েছে, বাসস্থান হারিয়েছে এবং নিয়মিত শিক্ষা বা স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ পাচ্ছে না। ইউনিসেফ জানায়, এ অবস্থায় শিশুদের সুরক্ষা এবং পুনর্বাসনের জন্য জরুরি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, যুদ্ধবিরতির সময়সীমায় বেসামরিক প্রাণহানি কমে আসা উচিত ছিল, কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি তার বিপরীত প্রমাণ করছে। তাদের মতে, ঘোষিত যুদ্ধবিরতির পরও হামলা অব্যাহত থাকলে মানবিক উদ্যোগগুলো বাধাগ্রস্ত হবে এবং শান্তি প্রক্রিয়া আরও দুরূহ হয়ে উঠবে। শিশুদের জীবন রক্ষার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের পূর্ণ প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি বলে সংস্থাগুলো মত প্রকাশ করে।

সমালোচকরা মনে করেন, গাজার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর অবিলম্বে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। যুদ্ধবিরতিকে অর্থবহ করে তুলতে সহিংসতা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা, মানবিক করিডোর নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অবাধ চলাচলের সুযোগ তৈরি করা জরুরি। অন্যথায় গাজার শিশুরা যুদ্ধবিরতির সুবিধা বাস্তবে পাবে না।

ইউনিসেফের সর্বশেষ প্রতিবেদন গাজার শিশুদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি কঠোর বাস্তবতা তুলে ধরেছে। সংস্থাটি জানায়, অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ এবং বিস্তৃত মানবিক সহায়তা ছাড়া শিশুদের জীবন ও ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। মানবিক সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলছে, যুদ্ধবিরতির সময় শিশুদের সুরক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া এখন সময়ের দাবি।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com