বিনোদন ডেস্ক
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুভূত ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৬ জনের মৃত্যু এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। ভূমিকম্পের প্রভাবে দেয়াল ধস ও ফাটলের ঘটনাও ঘটেছে। কম্পনের তীব্রতা মানুষকে বাড়ি ও অফিস ত্যাগ করে খোলা জায়গায় নামতে বাধ্য করেছে।
বাংলাদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্পের এই ঘটনা মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ভূমিকম্পের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও মানবজীবনের উপর এর প্রভাবকে বিভিন্ন চলচ্চিত্রেও নির্মাণ করা হয়েছে। এই চলচ্চিত্রগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই এবং মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রামের চিত্রায়ণ করা হয়েছে।
২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হলিউড চলচ্চিত্র ‘স্যান অ্যান্ড্রেস’ ক্যালিফোর্নিয়ার কুখ্যাত স্যান অ্যান্ড্রেস ফল্টের উপর ভিত্তি করে নির্মিত। গল্পে দেখা যায়, হঠাৎ এক প্রলয়ঙ্করী ৯ মাত্রার ভূমিকম্প ক্যালিফোর্নিয়াকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। একজন রেসকিউ পাইলট তার পরিবারকে বাঁচাতে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে সান ফ্রান্সিসকো পর্যন্ত ভ্রমণ করে। সিনেমায় ধ্বংসস্তূপ, ধসে পড়া বহুতল ভবন এবং সুনামির দৃশ্য অত্যন্ত বাস্তবসম্মতভাবে ফুটে উঠেছে।
২০০৪ সালের ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট ভূমিকম্প এবং পরবর্তীতে উদ্ভূত সুনামি অবলম্বনে নির্মিত ‘দি ইম্পসিবল’ (২০১২) সিনেমায় থাইল্যান্ডে ছুটিতে যাওয়া একটি স্প্যানিশ পরিবারের সদস্যদের বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং বেঁচে থাকার লড়াই প্রদর্শিত হয়েছে। গল্পে পরিবার একে অপরকে খুঁজে পাওয়ার জন্য অসাধ্য সাধনের চেষ্টা করে। এতে অভিনয় করেছেন নাওমি ওয়াটস ও ইউয়ান ম্যাকগ্রেগর।
‘আফটারশক’ (২০১২) চলচ্চিত্রে চিলির একটি নাইটক্লাবে বিশাল ভূমিকম্প আঘাত হানার পর একদল পর্যটকের বেঁচে থাকার সংগ্রামের গল্প ফুটে উঠেছে। ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপ থেকে বের হওয়ার পর তাদের অভিজ্ঞতা এবং পরবর্তী বিপদের মুখোমুখি হওয়ার চিত্রায়ণ করা হয়েছে।
নরওয়েজিয়ান চলচ্চিত্র ‘দ্য কোয়াক’ (২০১৮) ‘দ্য ওয়েভ’ ছবির সিক্যুয়েল হিসেবে পরিচিত। এতে একজন ভূতাত্ত্বিক টানেল ধসের ঘটনা তদন্তের সময় অসলো শহরে একটি বিপজ্জনক ভূমিকম্পের আগাম সতর্কতা পান। ভূমিকম্প শুরু হলে তিনি পরিবারকে বাঁচাতে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে লড়াই করেন। সিনেমাটি ভূমিকম্পের ভয়াবহতা এবং পারিবারিক বন্ধনের গুরুত্ব তুলে ধরেছে।
১৯৭৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আর্থকোয়েক’ সিনেমায় লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে কাল্পনিকভাবে আঘাত হানা ৯.৯ মাত্রার ভূমিকম্পের চিত্রায়ণ করা হয়েছে। বিভিন্ন চরিত্রের ব্যক্তিগত জীবন এবং বেঁচে থাকার সংগ্রামের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মানবিক প্রভাব দেখানো হয়েছে। বিশেষ ইফেক্ট ও তারকাবহুল অভিনয়ের কারণে চলচ্চিত্রটি এখনও স্মরণীয়।
বাংলাদেশে সর্বশেষ ভূমিকম্পের এই ঘটনা প্রমাণ করেছে যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য সতর্ক থাকা এবং জরুরি প্রস্তুতি থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যতে এমন প্রাকৃতিক ঘটনা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি ও সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।