আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইংল্যান্ডে আগামী তিন বছর রেলভাড়া বাড়ানো হবে না। ব্রিটিশ সরকারের এই ঘোষণা আগামী বছরের জন্য রেলভাড়া স্থির রাখার বিষয়ে নেওয়া প্রথম পদক্ষেপ নয়; এটি ৩০ বছর পর এমন সিদ্ধান্ত। সরকার জানিয়েছে, ২০২৭ সালের মার্চ পর্যন্ত রেলভাড়া বৃদ্ধি পাবে না, যা দেশের যাত্রীদের জন্য বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, স্থিতিশীল রেলভাড়া রেগুলেটেড টিকিটের ওপর প্রযোজ্য হবে। এর মধ্যে সিজন টিকিট, অফ-পিক রিটার্ন এবং নির্দিষ্ট কিছু অন্যান্য রেগুলেটেড টিকিট অন্তর্ভুক্ত। চলতি বছরের মার্চে গড়ে ৪.৬ শতাংশ রেলভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। সাধারণত রেলভাড়া প্রতি বছর জানুয়ারিতে বাড়ানো হতো এবং তার হার পূর্বের বছরের জুলাইয়ে খুচরা মূল্যসূচক (আরপিআই)–এর ওপর ১ শতাংশ যোগ করে নির্ধারণ করা হতো। তবে সবসময় এই সূত্র মেনে চলা হতো না।
ব্রিটিশ সরকার বলেছে, এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হলো জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। যাতায়াতের খরচ দৈনন্দিন ব্যয়ের একটি বড় অংশ, তাই রেলভাড়া স্থির রাখলে সরাসরি মুদ্রাস্ফীতি কমানোর ক্ষেত্রে সহায়তা হবে। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ২০২১ সাল থেকে ইংল্যান্ডে রেলভাড়া জানুয়ারির বদলে মার্চে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও রেগুলেটেড ভাড়া স্থির থাকলেও অনিয়ন্ত্রিত ভাড়া বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে সাধারণত তা রেগুলেটেড ভাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখে।
চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এক বছরে অনিয়ন্ত্রিত ভাড়া ৫.৫ শতাংশ বেড়েছে, যা রেগুলেটেড ভাড়ার চেয়ে ১.১ শতাংশ বেশি। একই সময়ে মোট রেলভাড়া বেড়েছে ৫.১ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের রেল অপারেটরদের সংগঠন রেল ডেলিভারি গ্রুপ ভাড়া স্থির রাখার সিদ্ধান্তকে যাত্রীদের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। সংগঠনের এক মুখপাত্র জানান, রেল ব্যবস্থাকে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে আসন্ন সংস্কারগুলো বাস্তবায়নে কাজ করা হবে।
১৯৯৬ সালে ব্রিটিশ রেল বেসরকারীকরণের পর থেকে যুক্তরাজ্যে কিছু ভাড়া সরকার নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডে মোট রেলভাড়ার প্রায় ৪৫ শতাংশ সরকার নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে রেলভাড়া স্থির রাখার এই ঘোষণা শুধুমাত্র ইংল্যান্ডের ট্রেন ও সেখানে পরিচালিত কোম্পানিগুলোর জন্য প্রযোজ্য। এই সিদ্ধান্তের ফলে ইংল্যান্ডের যাত্রীরা আগামী তিন বছর অভ্যন্তরীণ রেলযাত্রায় স্থিতিশীল খরচ উপভোগ করতে পারবে, যা দৈনন্দিন যাতায়াতের ব্যয়ের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর সীমিত চাপ কমাবে।
রেলভাড়া স্থির রাখার পদক্ষেপকে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আগামী বাজেট ঘোষণার আগে এই সিদ্ধান্ত সরকারের নীতি ও পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি কমানোর প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত।