আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভেনেজুয়েলার আকাশসীমায় উচ্চমাত্রার সামরিক কার্যক্রমের সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তার পর ছয়টি আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনস দেশটিতে তাদের ফ্লাইট স্থগিত করেছে। এতে স্পেনের ইবেরিয়া, পর্তুগালের টিএপি, চিলির লাতাম, কলম্বিয়ার অ্যাভিয়ানকা, ব্রাজিলের গোল এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর ক্যারিবিয়ান এয়ারলাইনস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ভেনেজুয়েলার এয়ারলাইনস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মারিসেলা দে লোয়াইজা জানিয়েছেন, এই ফ্লাইট স্থগিতাদেশের মেয়াদ সম্পর্কে এখনও কোনো নির্দিষ্ট সময়সূচি দেওয়া হয়নি। তবে এই পরিস্থিতিতে যে এয়ারলাইনগুলো ফ্লাইট চালু রেখেছে, সেগুলো হলো পানামার কোপা এয়ারলাইনস, স্পেনের এয়ার ইউরোপা ও প্লাসআল্টরা, তুর্কিশ এয়ারলাইনস এবং ভেনেজুয়েলার স্থানীয় লেজার এয়ারলাইনস।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলার সামরিক কার্যক্রম বৃদ্ধির কারণে আকাশসীমায় বেসামরিক বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই পরিস্থিতি ওভারফ্লাইট, অবতরণ, উড্ডয়ন এবং বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনাসহ যেকোনো উচ্চতায় বিমান চলাচলের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র অঞ্চলটিতে একটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ, বিভিন্ন নৌবাহিনী জাহাজ এবং স্টেলথ বিমান মোতায়েন করেছে। ওয়াশিংটনের দাবি, এই পদক্ষেপগুলো মূলত মাদক পাচার দমন কার্যক্রমের অংশ। তবে ভেনেজুয়েলার সরকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, মোতায়েনকৃত শক্তি সরকারবিরোধী কোনো পদক্ষেপের জন্য ব্যবহার করা হতে পারে।
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগর ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক পাচারের সন্দেহে ২০টিরও বেশি নৌযানে অভিযান পরিচালনা করেছে, যার ফলে অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছে। তবে এখনো যুক্তরাষ্ট্র প্রমাণ দিতে পারেনি যে লক্ষ্যভূক্ত নৌযানগুলো সত্যিই মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিল বা তারা কোনো সরাসরি হুমকি সৃষ্টি করেছিল। এ পরিস্থিতিতে অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলো সতর্কতার সঙ্গে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
ভেনেজুয়েলার সামরিক উত্তেজনা, যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা ও আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের পদক্ষেপের ফলে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিমান চলাচলের নিরাপত্তা এবং বেসামরিক যাত্রীসেবায় অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোতে কার্যক্রম সীমিত থাকবে এবং এটি ভেনেজুয়েলার অর্থনীতি ও পর্যটন খাতেও প্রভাব ফেলতে পারে।