1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:১৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

ইসরায়েলি বিমান হামলায় বৈরুতে হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার নিহত

রিপোর্টার
  • আপডেট : সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫
  • ২৪ বার দেখা হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চল দাহিয়েহ এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ সামরিক কমান্ডার হায়সম আলী তাবাতাবাই নিহত হয়েছেন। রোববার পরিচালিত এ হামলায় তাবাতাবাই ছাড়াও আরও কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন বলে স্থানীয় সরকারি সূত্র নিশ্চিত করেছে। ঘটনাটি লেবানন–ইসরায়েল উত্তেজনার সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

স্থানীয় নিরাপত্তা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দাহিয়েহ এলাকার আবাসিক ভবনটিতে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। হামলার ফলে ভবনটির একাধিক তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আশপাশের গাড়ি ও স্থাপনাগুলোতেও ব্যাপক ক্ষতি দেখা দেয়। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ঘটনায় কমপক্ষে ২৮ জন আহত হয়েছেন, যাদের বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিহত হায়সম আলী তাবাতাবাই সংগঠনের সশস্ত্র শাখার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছিলেন। সংগঠনের অফিসিয়াল বিবৃতিতে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হলেও সুনির্দিষ্ট পদ উল্লেখ করা হয়নি। তাবাতাবাই দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ লেবাননে সামরিক কার্যক্রম তদারকি করে আসছিলেন বলে জানা গেছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হামলার লক্ষ্য ছিল তাবাতাবাই এবং তাকে “নিষ্ক্রিয়” করা হয়েছে। ইসরায়েলি সরকারি সূত্র আরও দাবি করেছে, পূর্ববর্তী বছর সংঘাত শুরুর পর থেকে এটি ছিল তাকে টার্গেট করার তৃতীয় প্রচেষ্টা। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত এলাকায় হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি ও হামলার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় ইসরায়েল এই অঞ্চলে নজরদারি ও লক্ষ্যভিত্তিক অভিযান জোরদার করেছে।

লেবাননের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হামলার পরপরই ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে এবং উদ্ধারকাজ শুরু করে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে আটকে পড়া লোকজনকে বের করে আনা হয় এবং আশপাশের এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। স্থানীয় প্রশাসনের বরাত দিয়ে জানা গেছে, হামলার ফলে সৃষ্ট চাপ ও শব্দে বহু বাসিন্দা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং এলাকায় সাময়িকভাবে বিদ্যুৎব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়।

হায়সম আলী তাবাতাবাই ১৯৬৮ সালে বৈরুতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা লেবানিজ ও বাবা ইরানি; শৈশব থেকেই তিনি দক্ষিণ লেবাননে বড় হন। মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি হিজবুল্লাহতে যোগ দেন এবং পরবর্তী সময়ে সংগঠনের সামরিক কাঠামোর বিভিন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। দক্ষিণ লেবানন ও সীমান্তবর্তী এলাকায় ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতমুখী পরিস্থিতিতে তার ভূমিকা সংগঠনের ভেতরে বিশেষভাবে বিবেচিত হতো।

হামলার পর লেবাননের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা মহলে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় ইতিমধ্যেই টহল বাড়ানো হয়েছে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত লেবানন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে অভ্যন্তরীণভাবে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

আঞ্চলিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে এমন হামলা দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনাকে আরও গভীর করতে পারে এবং সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষ বাড়ার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। গত কয়েক মাসে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার কারণে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের বহু এলাকা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখোমুখি রয়েছে। ফলে এই ঘটনা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নতুন করে নিরাপত্তা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

ইসরায়েলি সামরিক কৌশল ও হিজবুল্লাহর অবস্থান বিবেচনায় পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে, তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। তবে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, ভবিষ্যতে উত্তেজনা প্রশমিত না হলে সীমান্ত অঞ্চলের বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে। লেবাননের সরকারি সংস্থা ও মানবিক সংগঠনগুলো সম্ভাব্য জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি জোরদার করেছে।

দাহিয়েহ এলাকায় পরিচালিত এই হামলা শুধু একটি লক্ষ্যভিত্তিক সামরিক অভিযানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি লেবানন–ইসরায়েল সম্পর্কের ক্রমাবনতি এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির জটিলতার একটি প্রতিফলন হিসেবেও দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতা জরুরি হয়ে দাঁড়াতে পারে, কারণ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংঘাতে আঞ্চলিক অস্থিরতা দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে।

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলসহ বৈরুতের কিছু এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা অব্যাহত রয়েছে, এবং সরকারি সংস্থাগুলো হামলার ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ পরিমাণ নিরূপণের কাজ শুরু করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে লেবাননের জনগণসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ঘনিষ্ঠভাবে ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করছে, কারণ সাম্প্রতিক এই হামলা আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে নতুন অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করেছে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com