আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মালয়েশিয়ার কেদাহ, কেলান্তান ও তেরেঙ্গানুতে হঠাৎ প্রচণ্ড মৌসুমি বৃষ্টির কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২ হাজার ১১২ জন বাসিন্দাকে নিরাপত্তার কারণে সাময়িক ত্রাণ কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কেদাহ সর্বশেষ বন্যাকবলিত রাজ্য হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। কেদাহ রাজ্যের কুলিম জেলার ৬৬ পরিবার থেকে ২২৫ জন মানুষকে তিনটি ত্রাণকেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে। বন্যার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কাম্পুং সিয়াম, কাম্পুং বুকিত সারাং আয়াম, কাম্পুং পায়া সেরদাং, কাম্পুং তিতি তক আরিস এবং কাম্পুং পদাং চায়না।
কেলান্তান রাজ্যে বন্যার পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। শনিবার রাতের ১ হাজার ১৭০ জন বন্যার্ত রোববার সকালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬২৩ জনে। বর্তমানে কোটা বারু, তুমপাট ও বাচক জেলায় মোট ১২টি ত্রাণকেন্দ্র চালু রয়েছে। এ রাজ্যে বৃষ্টিপাত শুক্রবার থেকে অব্যাহত রয়েছে, যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পরিস্থিতি আরও তীব্র করেছে।
তেরেঙ্গানুতে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কাম্পুং পুলাউ রেদাং মসজিদ ত্রাণকেন্দ্রে ২৬৪ জন এখনও আশ্রয় নিয়েছেন, যেখানে শনিবার রাতে এই সংখ্যা ছিল ২৭৬ জন। স্থানীয় প্রশাসন ও ত্রাণকর্মীরা বন্যার্তদের জন্য খাবার, পানি ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা চালু রেখেছেন।
মালয়েশিয়ার আবহাওয়া অধিদপ্তর রোববার দুপুর ১টা পর্যন্ত সাতটি রাজ্যে বজ্রঝড়, ভারি বৃষ্টি ও প্রবল দমকা হাওয়ার সতর্কতা জারি করেছে। সতর্কতা জারিকৃত রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে পেরাক, পাহাং, সেলাঙ্গর, নেগরি সেম্বিলান, জোহর, মেলাকা ও সাবাহ। বিশেষত মানজুং, কিন্তা, ক্যামেরন হাইল্যান্ডস, সাবাক বারনাম, পোর্ট ডিকসন, তাংকাক ও সান্দাকান সহ বিভিন্ন জেলা ঝুঁকিতে রয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। বন্যার কারণে সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটেছে এবং কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহেও ব্যাঘাত দেখা দিয়েছে। তারা বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং বিপদমুক্ত স্থানে অবস্থান করতে পরামর্শ দিয়েছেন।
মৌসুমি বৃষ্টিপাত এবং জলাবদ্ধতার কারণে স্থানীয় স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সচল রাখা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য জরুরি সহায়তা প্রদানের কাজ তৎপরভাবে চলছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বন্যার পানি দ্রুত সরানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অতিরিক্ত প্রচেষ্টা চালাতে হতে পারে।
প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে প্রতি বছরই বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়। কেলান্তান, তেরেঙ্গানু ও কেদাহ রাজ্যে নদীর পানি বৃদ্ধি এবং অব্যাহত ভারি বৃষ্টিপাত সাময়িকভাবে জনজীবন ব্যাহত করছে। সরকারি কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই প্রভাবিত এলাকা পর্যবেক্ষণ এবং ত্রাণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে জনসাধারণের নিরাপত্তা সর্বাধিক নিশ্চিত করা যায়।