জেলা প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম নগরের কদমতলী এলাকায় সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে একটি কম্বলের গোডাউনে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের একজন ডিউটি অফিসার জানিয়েছেন, আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে গোডাউনে ভেতরে প্রচুর দাহ্য সামগ্রী থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “দুপুর ২টার দিকে খবর পাওয়া মাত্রই আমরা ছয়টি ইউনিট পাঠিয়েছি। আগুন এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোডাউনের ভেতর থেকে হঠাৎ করে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুন বড় আকার ধারণ করে। তারা চেষ্টা করেছিলেন পানি ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার, তবে তা সফল হয়নি। শ্রমিকরা আগুন লাগার সময় দুপুরের খাবারের বিরতিতে ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা আশঙ্কা করছেন, আগুনে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হবে এবং আগুন লাগার কারণ তদন্তের মাধ্যমে সঠিকভাবে জানানো হবে। এছাড়া, গোডাউনে থাকা দাহ্য সামগ্রীর পরিমাণ এবং গোডাউনের গঠনগত বৈশিষ্ট্য আগুনের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, আগুনের ঘটনায় সরাসরি কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং অর্থনৈতিক প্রভাব নিরূপণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও মালিকের সঙ্গে সমন্বয় করে বিস্তারিত তদন্ত চালানো হবে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে এলাকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের কদমতলী এলাকায় গোডাউনে আগুন লাগার ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার ঘটেছে। এর ফলে জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, দাহ্য সামগ্রীর সংরক্ষণ ও আগুন প্রতিরোধ কৌশল উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের এক যৌথ সভায় বলা হয়েছে, আগুন লাগার সম্ভাব্য কারণ চিহ্নিত করার জন্য গোডাউনের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, স্টোরেজ প্রক্রিয়া এবং শ্রমিক নিরাপত্তা প্রোটোকল পর্যালোচনা করা হবে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসেবে, ভবিষ্যতে এমন ধরনের অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে গোডাউনের নিরাপত্তা মান উন্নত করার ওপর জোর দেওয়া হবে।
চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক অঞ্চলে এই ধরনের অগ্নিকাণ্ড স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর প্রভাব নিরূপণ করা গুরুত্বপূর্ণ। ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ সম্পন্ন হলেও গোডাউনের ভেতরে থাকা সব মালামাল এবং পরিকাঠামোতে পর্যালোচনা চালানো হবে।
এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন এবং ফায়ার সার্ভিস একযোগে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।