বিনোদন ডেস্ক
মুম্বাই, সোমবার, ২৪ নভেম্বর: বলিউডের কিংবদন্তী অভিনেতা ধর্মেন্দ্র হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন। দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং সহকর্মী অমিতাভ বচ্চন এই দুঃসংবাদে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। বন্ধুর শেষ যাত্রায় অংশগ্রহণের পর রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এক অদ্ভুত শূন্যতা! চারপাশের বাতাস যেন কমে গেছে।’
অমিতাভ বচ্চন আরও উল্লেখ করেছেন, ‘আর এক স্তম্ভ চিরবিদায় নিলেন, জীবনের রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে। অজস্র কোলাহলের মাঝে এক গভীর নিস্তব্ধতা তৈরি করে গেলেন। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।’ ধর্মেন্দ্রের মৃত্যুতে বলিউড তথা সমগ্র ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে একটি যুগান্তকারী ক্ষতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ধর্মেন্দ্র ও অমিতাভ বচ্চনের বন্ধুত্ব ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে বিশেষ স্থান অধিকার করেছে। পরিচালক রমেশ সিপ্পির ১৯৭৫ সালের কালজয়ী ছবি ‘শোলে’-তে ‘জয়’ এবং ‘বীরু’ চরিত্রে অভিনয় করে তারা কোটি দর্শকের হৃদয়ে অমর হয়ে ওঠেন। বিশেষ করে গানের মাধ্যমে প্রকাশিত ‘ইয়ে দোস্তি হাম নেহি তোড়েঙ্গে’ তাঁদের বন্ধুত্বকে চিরন্তনভাবে প্রমাণ করেছে। চলতি বছরই ছবিটির ৫০ বছর পূর্ণ হওয়ার কথা থাকলেও ধর্মেন্দ্রের মৃত্যু সেই ঐতিহাসিক জুটিকে অকালেই ছিন্ন করেছে।
ধর্মেন্দ্র-এর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর ছেলে অভিষেক বচ্চনকে সঙ্গে নিয়ে অমিতাভ বচ্চন দ্রুত বন্ধুর বাসভবনে পৌঁছে শেষকৃত্য পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি নীরবে দীর্ঘ সময় ধরে প্রিয় বন্ধুকে শেষবারের জন্য দেখেছেন। বন্ধুর এই প্রয়াণে অমিতাভের শোক ও শূন্যতার অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মধ্যে।
বলিউডের পেশাজীবী ও সমালোচকরা ধর্মেন্দ্রকে শুধু বড় পর্দার একজন অভিনেতা হিসেবে নয়, বরং একজন নিঃস্বার্থ বন্ধু এবং সহকর্মী হিসেবে স্মরণ করছেন। তাঁর অভিনয়, বন্ধুত্ব এবং ব্যক্তিত্ব ভারতের চলচ্চিত্র জগতে বহু প্রজন্মকে প্রেরণা দিয়ে যাবে। ধর্মেন্দ্রের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার ১০০টিরও বেশি ছবিকে ছুঁয়ে গেছে এবং তার অভিনয়শৈলী এখনও নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদের জন্য দিকনির্দেশক।
অমিতাভ-বচ্চন এবং ধর্মেন্দ্র জুটির অভিনয় দর্শক ও সমালোচকদের মনে অমলিন চিহ্ন রেখে গেছে। তাঁদের বন্ধুত্ব ও সহযাত্রার গল্প চলচ্চিত্র ইতিহাসে প্রায়শই উদাহরণ হিসেবে উল্লিখিত হয়। বিশেষ করে ‘শোলে’-এর জয়-বীরু জুটি ভারতীয় সিনেমার বন্ধুত্বের মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত।
ধর্মেন্দ্র প্রয়াণের পর শিল্পী সমিতি এবং চলচ্চিত্র জগতে তাঁকে স্মরণ করে নানা ধরনের শ্রদ্ধাঞ্জলি ও অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাঁর অবদান এবং চলচ্চিত্র জগতে প্রভাব ভবিষ্যতেও দীর্ঘদিন স্মৃতিতে থাকবে। অমিতাভ বচ্চনের প্রকাশিত শোকবার্তা এবং বন্ধুর প্রতি গভীর আবেগ সমগ্র চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে ধরা হচ্ছে।