জেলা প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে দাবিকৃত চাঁদা পরিশোধ না করার কারণে এক ব্যবসায়ী ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলার ৯নং ভোলাকোট ইউনিয়নের সাহারপাড়া গ্রামের চা দোকান ও মুদি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের ওপর ছুরিকাঘাত চালানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় আনোয়ারকে রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোলাকোট ইউনিয়নের পরিচিত সন্ত্রাসী ও যুবদলের সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে দুই লাখ টাকার চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। আনোয়ার নিয়মিতভাবে চাঁদা পরিশোধে অপারগতা প্রকাশ করতেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দাবিকৃত টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউসুফ আনোয়ারকে উপর্যুপরি বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করেন এবং ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল বারী জানান, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, “দাবিকৃত চাঁদা পরিশোধ না করার কারণে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে আনোয়ারকে ছুরিকাঘাত করা হয়। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। থানায় হত্যার মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।”
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, ইউসুফ হোসেন ভোলাকোট ইউনিয়নের যুবদলের সক্রিয় সদস্য হিসেবে পরিচিত। এলাকাবাসী জানায়, ইউসুফ নিয়মিতভাবে যুবদলের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে থাকেন এবং স্থানীয়ভাবে দীর্ঘদিন ধরেই পরিচিত সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত ছিলেন।
এই হত্যাকাণ্ড স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা চাঁদার ভয় ও সন্ত্রাস মোকাবেলার জন্য প্রশাসনের তৎপরতা বৃদ্ধির দাবি করছেন। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীল পদক্ষেপ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রামগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কবির হোসেন জানান, ইউসুফ যুবদলের একজন কর্মী হলেও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে দলের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি বলেন, “আমরা ঘটনায় সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে সনাক্ত এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করব।”
মৃত্যু ও ঘটনার প্রেক্ষাপট স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে চাঁদা দাবির সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের সরাসরি সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ময়নাতদন্তের ফলাফলের পর হত্যার সঠিক কারণ ও সময়মতো অপরাধীর আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঘটনার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে স্থানীয় ব্যবসায়িক পরিবেশে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রশাসনের পদক্ষেপকে আরও জোরদার করতে পারে। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব দেখানোর জন্য কার্যক্রম অব্যাহত রাখছে।