বিনোদন ডেস্ক
দক্ষিণ কোরিয়ার খ্যাতিমান অভিনেতা লি সুন-জায়ে আজ প্রয়াত হয়েছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। ১৯৩৪ সালে বর্তমান উত্তর কোরিয়ার হোয়েরিয়ং এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন লি সুন-জায়ে। কোরীয় যুদ্ধের আগে তিনি সিউলে চলে আসেন এবং সেখানেই তার শিক্ষাজীবন ও অভিনয় যাত্রার সূচনা ঘটে।
লি সুন-জায়ের অভিনয় জীবন শুরু হয় সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র থাকাকালীন। ১৯৫৬ সালে ‘বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’ নাটকের মাধ্যমে মঞ্চে তার অভিষেক ঘটে। পরবর্তী ছয় দশক ধরে তিনি নাটক, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করে কোরিয়ান বিনোদন জগতের এক পরিচিত মুখ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
অভিনেতার প্রায় ছয় দশকের দীর্ঘ কর্মজীবনে আনুমানিক ১৪০টি উল্লেখযোগ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। তার সবচেয়ে পরিচিত কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে জনপ্রিয় সিটকম ‘হাই কিক থ্রু দ্য রুফ’, যা দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। পাশাপাশি, ঐতিহাসিক নাটক ‘দ্য কিং’স ফেস’-এ তার শক্তিশালী অভিনয় দর্শকদের মন জয় করে।
লি সুন-জায়ের সাম্প্রতিক ও প্রশংসিত কাজের মধ্যে অন্যতম হলো ‘নাবিলেরা’, যেখানে তিনি একটি বয়স্ক চরিত্রে অভিনয় করেন, যে দীর্ঘদিন ধরে নিজের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করে। এছাড়া ‘ডিয়ার মাই ফ্রেন্ডস’, ‘সেজং’, ‘ফাদার’স হাউজ’ এবং ‘দ্য গ্রেট কিং’ তার কর্মজীবনের উল্লেখযোগ্য এবং স্মরণীয় নাটকগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম প্রজন্মের টেলিভিশন অভিনেতাদের একজন হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। ১৯৬০-এর দশকে কোরিয়ান টেলিভিশনের পরীক্ষামূলক যুগে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, যা আধুনিক কোরিয়ান নাটক ও আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় কে-ড্রামের সঙ্গে একটি শক্তিশালী সেতুবন্ধন হিসেবে বিবেচিত। তার দীর্ঘ কর্মজীবন এবং বহুমাত্রিক প্রতিভা কোরিয়ার বিনোদন জগতে একটি স্থায়ী প্রভাব রেখে গেছে।
লি সুন-জায়ের অবদান শুধুমাত্র অভিনয় ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল না; তিনি বিভিন্ন প্রজন্মের অভিনেতা ও দর্শকদের জন্য একটি অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবেও বিবেচিত। তার জীবন ও কাজের স্মৃতি দক্ষিণ কোরিয়ার সাংস্কৃতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে স্মরণীয় থাকবে।