আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পশ্চিম আফ্রিকার গিনি-বিসাউয়ে সামরিক বাহিনী বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতি উমারো সিসোকো এমবালোকে পদচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করেছে। সামরিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেশের উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের একটি ভিডিওবার্তায় জানানো হয়। সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা প্রেসিডেন্ট এমবালোকে আটক করেছে এবং তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তা ও সামরিক জেনারেলকেও নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট এমবালো ছাড়াও তার প্রতিদ্বন্দ্বী ফার্নান্দো দিয়াস, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডোমিঙ্গোস পেরেইরা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বটশে কান্ডেক, সেনাপ্রধান জেনারেল বিআগে না এনটান এবং তার ডেপুটি জেনারেল মামাদু টুরেককে আটক করা হয়েছে। সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে আকাশ, জল ও স্থলপথের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে এবং কারফিউ জারি করেছে।
অভ্যুত্থানের সময় রাজধানী বিসাউসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। রাষ্ট্রপতির বাসভবন, নির্বাচন কমিশন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লক্ষ্যবস্তু হিসেবে চিহ্নিত হয়। প্রেসিডেন্ট এমবালো পরে গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সামরিক অভ্যুত্থানের পেছনে কয়েকদিন আগে সংবিধানবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের ঘটনা একটি মূল প্রভাব ফেলেছে। এ ঘটনাই সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনার জন্ম দেয় এবং তা এই অভ্যুত্থানের দিকে নিয়ে যায়।
গিনি-বিসাউয়ে রোববার অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের ফলাফল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করার কথা ছিল। তবে সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে নির্বাচনি কার্যক্রম স্থগিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রয়াসে নজরদারি চালাচ্ছেন।
অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক রূপ নিয়েছে। সামরিক সরকারের এই পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন। এছাড়াও, দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও অস্থিরতার সম্ভাবনা রয়েছে।
সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর, সাধারণ জনগণকে শান্ত থাকতে এবং সরকারের নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোও আপাতত তাদের কার্যক্রম সীমিত করেছে। এই অভ্যুত্থানের পরবর্তী ধাপ এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সংস্থাগুলোর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।