আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর দেশটিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে তার তিন বোন অভিযোগ তুলেছেন যে, তারা ভাইয়ের সঙ্গে বারবার সাক্ষাৎ করতে চেয়েও অনুমতি পাননি এবং সাক্ষাতের জন্য দাবি জানালে পুলিশ তাদের শারীরিকভাবে হেনস্থা করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আদিয়ালা কারাগারের বাইরে নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। এ ঘটনায় ইমরান খানের সমর্থকরা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, হাজার হাজার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ও সমর্থক আদিয়ালা কারাগারের আশেপাশে একত্রিত হয়েছেন।
আদিয়ালা কারাগার কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, ইমরান খান বর্তমানে কারাগারেই রয়েছেন এবং তাকে অন্য কোথাও সরানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। তারা আরও জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণ সুস্থ এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিচ্ছেন। কারাগারে তার অসুস্থতার যে কোনো খবর ভিত্তিহীন।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, কারাগারে ইমরান খানকে সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রাপ্ত খাবারের মান এমন যে তা পাঁচ তারকা হোটেলেও কম পাওয়া যায়। এছাড়া তার ব্যবহারের জন্য টেলিভিশন, ব্যায়ামের যন্ত্রাংশ ও ডাবল বেডের ব্যবস্থা রয়েছে।
ইমরান খানের রাজনৈতিক ও আইনগত পরিস্থিতি দীর্ঘকাল ধরে বিতর্কের বিষয়। ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর পর থেকে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি, সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে হামলা এবং রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ফাঁস করার অভিযোগ। ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনাগুলি পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে। পিটিআই সমর্থকদের মধ্যে উদ্বেগ এবং কারাগার কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে কোনো জল্পনা দ্রুত তথ্যের মাধ্যমে সমাধান না হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে।
সাম্প্রতিক ঘটনার আলোকে দেখা যায়, পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উত্তেজনা এবং গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়া দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা উল্লেখ করছেন, কারাগারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অবস্থান এবং তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
এদিকে, আদিয়ালা কারাগারের আশপাশে সমর্থকদের জমায়েত এবং নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই পরিস্থিতি সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, কারণ যে কোনো উত্তেজনা দ্রুত সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।