আন্তর্জাতিক ডেস্ক
চীন সরকার দেশের উঁচু ভবনগুলোতে অগ্নিনিরাপত্তা ঝুঁকি কমাতে একটি বিশেষ পরিদর্শন অভিযান শুরু করেছে। শনিবার (২৯ নভেম্বর) চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভি এ খবর জানিয়েছে। এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে হংকংয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে, যাতে অন্তত ১২৮ জন নিহত হয়েছেন। বেইজিং থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চীনের স্টেট কাউন্সিল ওয়ার্ক সেফটি কমিটি ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
হংকংয়ের এই অগ্নিকাণ্ড শহরটিতে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। হংকং বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর এবং এখানে বহু উচ্চতাপ্রাপ্ত আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চভবনে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে আসছিলেন।
সিসিটিভি জানায়, অভিযানকালে উঁচু ভবনগুলোতে দাহ্য বা জ্বলনশীল উপকরণ ব্যবহারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া বাঁশের মাচা বা অগ্নি-প্রতিরোধক নয় এমন নিরাপত্তা জাল ব্যবহারের বিষয়টিও নজরে রাখা হবে। অভিযান চলাকালীন ভবনের নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত নিয়মাবলী মেনে চলা হচ্ছে কি না, তা যাচাই করা হবে।
চীনের স্টেট কাউন্সিল ওয়ার্ক সেফটি কমিটির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সব অঞ্চলের কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল হতে হবে। উন্নয়ন ও নিরাপত্তাকে সমন্বয় করতে হবে। উঁচু ভবনে বড় ধরনের অগ্নি ঝুঁকি তদন্ত ও প্রতিকারকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।’ এই নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসনগুলোকে ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের অভিযানের মাধ্যমে ভবনের অগ্নিনিরাপত্তা সংক্রান্ত নীতি ও নিয়মাবলী কঠোরভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব হবে। এটি ভবিষ্যতে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।
উচ্চ ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা পরীক্ষার পাশাপাশি কমিটিটি ভবন মালিক ও নির্মাণ সংস্থাগুলোর জন্য নতুন নির্দেশিকা প্রণয়ন করতে পারে। এতে ভবন নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ মানদণ্ড আরও শক্তিশালী হবে। এই উদ্যোগ চীনের শহুরে নিরাপত্তা নীতি পর্যালোচনা এবং উন্নয়নমূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চীনের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যেখানে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর উচ্চ ভবনগুলোতে অগ্নিনিরাপত্তা সংক্রান্ত নিয়মাবলী নিয়ে দীর্ঘদিনের আলোচনা চলে আসছে। নিরাপত্তা তত্ত্বাবধানে এই ধরনের অভিযান ভবিষ্যতে মানুষের জীবন রক্ষা এবং আর্থ-সামাজিক ক্ষতি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।