আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর সিনেটর খুররম জিশান পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মৃত্যুর গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি নিশ্চিত করেছেন, ইমরান খান বর্তমানে জীবিত এবং আদিয়ালা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। সিনেটর জিশান বলেন, ইমরান খানকে ‘আইসোলেশনে’ রাখা হচ্ছে পাকিস্তান ত্যাগের জন্য চাপ দেওয়ার কৌশল হিসেবে।
খুররম জিশান ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সঙ্গে আলাপকালে জানান, ‘দেশের বর্তমান সরকার ইমরান খানের জনপ্রিয়তা নিয়ে আতঙ্কিত। এ কারণে তারা তার কোনো ছবি বা ভিডিও প্রকাশ করতে দিচ্ছে না।’ তিনি উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল ইমরান খানের হত্যার গুজব ছড়িয়েছে।
সিনেটর জিশান বলেন, ‘প্রায় এক মাস ধরে তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তার পরিবার, আইনজীবী এবং পিটিআই-এর জ্যেষ্ঠ নেতাদেরও তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এটি মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন। মনে হচ্ছে, সরকারের লক্ষ্য তাকে জোরপূর্বক কিছু পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করা হয়েছে যে তিনি বেঁচে আছেন এবং আদিয়ালা কারাগারে আছেন। তার স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ভালো আছে।’
জিশান জানান, পাকিস্তান সরকার ইমরান খানের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চাচ্ছে, যাতে তিনি দেশ ছেড়ে বিদেশে নির্বাসনে যেতে রাজি হন এবং কিছু বিষয়ে নীরব থাকেন। সিনেটর বলেন, ‘সরকার তাকে বিদেশে গিয়ে চুপ থাকার শর্তে তার পছন্দের স্থানে অবস্থান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু ইমরান খান যে ধরনের নেতা, তিনি কখনও এমন চুক্তিতে রাজি হবেন না।’
আইসোলেশনে রাখা এবং পরিবারের সঙ্গে দেখা না দেওয়ার ঘটনায় মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বিগ্ন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়া, দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর এ ধরনের ঘটনা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।
ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পিটিআই পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দলের নেতা ও সমর্থকরা নিয়মিত সরকারের কর্মকাণ্ড এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইমরান খানের বন্দিত্ব এবং সরকারের সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তি প্রক্রিয়া পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ করতে পারে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি নজরদারি করছেন। আন্তর্জাতিক চাপ ও পর্যবেক্ষণ পাকিস্তান সরকারের পদক্ষেপকে প্রভাবিত করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া, দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোও ইমরান খানের মুক্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক দাবি জানাচ্ছে।
সংক্ষেপে, পাকিস্তানে ইমরান খানের আইসোলেশনে থাকা, তার পরিবারের সঙ্গে সীমিত যোগাযোগ এবং সরকারের সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তি প্রক্রিয়া দেশটির রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। এই পরিস্থিতি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সতর্কতার সঙ্গে নজর রাখছেন।