আন্তর্জাতিক ডেস্ক
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে সংলাপ ও সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির পথ খুলে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পোপ লিও চতুর্দশ।
রোববার (৩০ নভেম্বর) তিন দিনের তুরস্ক সফর শেষ করে লেবাননের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। পোপ এ সফরে আঙ্কারা, ইস্তাম্বুল এবং একসময়ের খ্রিস্টান ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ নগরী নিসিয়া (বর্তমান ইজনিক) পরিদর্শন করেন।
পোপ লিও চতুর্দশ বলেন, তুরস্ক ও লেবানন সফরের মূল লক্ষ্য ছিল শান্তির বার্তা পৌঁছে দেওয়া। তিনি বলেন, “উভয় সফরে একটি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে—এটি হলো শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়াস। তুরস্কে এবং এখন লেবাননে আসার উদ্দেশ্যও ছিল অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ও সংলাপের পরিবেশ তৈরি করা।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা তার সফরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই আলোচনায় তিনি তুরস্কে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার সঙ্গে খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদের সহাবস্থান এবং সমাজে শান্তির পরিবেশ গঠনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন। পোপ বলেন, “তুরস্কে ধর্মীয় সহাবস্থানের যে উদাহরণ তৈরি হয়েছে, তা বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের দেখায়, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি ও সংলাপ সম্ভব।”
মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে তিনি ভ্যাটিকানের আগের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের সমাধান দুই রাষ্ট্রভিত্তিক ন্যায়সঙ্গত সমাধানের মধ্য দিয়ে সম্ভব। তিনি জানান, ভ্যাটিকান এই প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখতে চায়।
পোপ লিও আরও বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে তার এবং প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, এরদোয়ান এই প্রস্তাবের সঙ্গে একমত এবং তুরস্ক এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
পোপের এই সফর ও মন্তব্য তুরস্ককে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবস্থান করছে এমন ইঙ্গিত দিচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধসহ মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে তুরস্কের মধ্যস্থতাকারী ভূমিকার মাধ্যমে সংলাপ ও সম্ভাব্য শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে পারে। পোপের সফর রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পর্যায়ে সংহতি ও সহাবস্থানের গুরুত্বকেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, পোপের বার্তা শান্তি প্রতিষ্ঠায় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং ধর্মীয় সংহতির প্রয়োজনীয়তার উপর আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করতে সহায়ক হতে পারে। তুরস্কের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, ধর্মীয় সহাবস্থান এবং আন্তর্জাতিক নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক এমন প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক শান্তি প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।