অর্থনীতি ডেস্ক
ঢাকা, রোববার, ৩০ নভেম্বর: দেশজুড়ে ভোক্তা পর্যায়ের সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এক বার্তায় জানিয়েছে, ডিজেলের দাম লিটারে ১০২ টাকা থেকে ১০৪ টাকা, অকটেনের দাম ১২২ টাকা থেকে ১২৪ টাকা, পেট্রোলের দাম ১১৮ টাকা থেকে ১২০ টাকা এবং কেরোসিনের দাম ১১৪ টাকা থেকে ১১৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দাম ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস বা বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণের লক্ষ্যে সংশোধিত প্রাইসিং ফর্মুলা প্রয়োগ করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হলো তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে দেশজুড়ে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিত করা।
জ্বালানি তেলের বাজার মূল্য বিশ্ববাজারের দর এবং সরবরাহ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দর বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোক্তা পর্যায়ে দাম সমন্বয় করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রতি মাসে তেলের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা, আন্তর্জাতিক ক্রয়মূল্য, রফতানি শুল্ক, ট্রান্সপোর্টেশন খরচ এবং স্থানীয় সরবরাহ পরিস্থিতি বিবেচনা করা হয়।
ডিজেল ও পেট্রোলের দাম বৃদ্ধির ফলে পরিবহণ খাতের উপর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষত, যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহনের খরচ বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেরোসিনের দাম বৃদ্ধি ঘরোয়া ব্যবহারকারীদের জন্য স্বল্পমাত্রায় হলেও দৈনন্দিন জীবনে ব্যয় বৃদ্ধি করতে পারে। মন্ত্রণালয় আশা করছে, দাম বৃদ্ধির পরও দেশের জ্বালানি বাজারে সরবরাহ অব্যাহত থাকবে এবং সাধারণ ভোক্তাদের উপর প্রভাব সীমিত থাকবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত মূল্য পর্যালোচনার মাধ্যমে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য, আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা এবং স্থানীয় চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের জ্বালানি খাতকে স্থিতিশীল রাখা। এছাড়া, ভোক্তাদের জন্য স্বচ্ছ ও যুক্তিসঙ্গত মূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিত করাও মন্ত্রণালয়ের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
বিশ্ববাজারে তেলের দামের ওঠানামা দেশজুড়ে জ্বালানি মূল্য নির্ধারণে প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতা থাকায় নিয়মিত মূল্য সমন্বয় ভোক্তা এবং শিল্প খাতের জন্য প্রয়োজনীয়। মূল্য পুনর্নির্ধারণে স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া ব্যবহার করার ফলে প্রতি মাসে দাম সমন্বয় সহজতর হচ্ছে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে।
এই নতুন দামের প্রভাবে দেশজুড়ে জ্বালানি খাতের ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারীরা তাদের কার্যক্রম পুনঃসমন্বয় করবেন। পরিবহণ খাত, শিল্প উৎপাদন এবং ঘরোয়া ব্যবহারের ওপর সামান্য প্রভাব পড়লেও, মন্ত্রণালয় আশা করছে যে সামগ্রিক অর্থনীতিতে তা নিয়ন্ত্রণযোগ্য থাকবে।