1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৩২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ ভোলার ১৩ জেলে ভারতের জলসীমায় আটক

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৮ বার দেখা হয়েছে

 

জেলা প্রতিনিধি

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ভোলার লালমোহন উপজেলার ১৩ জেলে নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ২০ দিন পর তাদের অবস্থান শনাক্ত হয়েছে। ভারতীয় জলসীমায় অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় নৌবাহিনী তাদেরকে ফিশিংবোটসহ আটক করে পশ্চিমবঙ্গের একটি থানায় হস্তান্তর করেছে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ তাদের আদালতে উপস্থাপন করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কারাবন্দি জেলেরা হলেন—ট্রলার মালিক ফারুক (৫৩), জাহাঙ্গীর (৩৮), শামিম (২৩), খোকন (৩৫), সজিব (২২), আলম (৪৬), হেলাল উদ্দিন (৪০), ফারুক (৪২), মাকসুদুর রহমান (৪২), ছাব্বির (২৫), নাছির, আব্দুল মালেক ও মাকসুদ। তাদের সবার বাড়ি ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার কাজে জড়িত এসব জেলে নিয়মিতভাবে স্থানীয় ঘাট থেকে সাগরে যাত্রা করে থাকেন।

জেলেদের আটক হওয়ার বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা প্রথম নিশ্চিত হন সোমবার দুপুরে। নিখোঁজ জেলেদের একজন ছাব্বির ভিডিও কলের মাধ্যমে তার চাচাতো ভাইয়ের মোবাইলে যোগাযোগ করেন এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। ভিডিও কলে আরও কয়েকজন জেলেকে দেখা যায়। পরে ট্রলার মালিক ফারুকও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং জানান যে তাদেরকে ভারতীয় পুলিশের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রায় ২০ দিন ধরে কোনো যোগাযোগ না থাকায় জেলেদের পরিবার ভয়াবহ অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন। ট্রলার মালিক ফারুকের ছেলে শাহীন বলেন, দীর্ঘ সময় নিখোঁজ থাকার পর তাদের জীবিত থাকার খবর পাওয়া পরিবারগুলোর জন্য স্বস্তির হলেও নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, কারণ ভারতীয় কারাগারে আটক থাকায় তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা ছাড়া জেলেদের মুক্ত করা সম্ভব হবে না।

এদিকে, ভোলার স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠনগুলো আটক জেলেদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির ভোলা জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. এরশাদ বলেছেন, সীমান্তবর্তী জলসীমায় মাছ ধরতে গিয়ে বাংলাদেশের জেলেদের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পড়ার ঘটনা নতুন নয়। তিনি সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের প্রতি অনুরোধ করেছেন দ্রুত কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করে জেলেদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে।

জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তারা তথ্য পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সাধারণত এ ধরনের ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে সীমান্ত অতিক্রমকারী জেলেদের ফেরত আনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তবে প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

গত ১০ নভেম্বর দুপুরে লালমোহনের ধলীগৌড়নগর ইউনিয়নের মাস্টারবাজার এলাকা থেকে মেঘনা নদীপথে ‘মা-বাবার দোয়া’ নামের ফিশিংবোটটি বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ট্রলারে পাঁচ দিনের প্রয়োজনীয় বাজার-সামগ্রী মজুত ছিল এবং চরফ্যাশনের সামরাজ ঘাটে গিয়ে অতিরিক্ত বরফ সংগ্রহ করা হয়। এরপর সাগরে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে তারা পুনরায় যাত্রা করে। ১১ নভেম্বর থেকে ট্রলারটির সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং পরিবারের সদস্যরা তখন থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের সন্ধান করতে থাকেন।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ ও ভারতের জলসীমার সীমানা অনেক জায়গায় স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান নয়। আবহাওয়া খারাপ হওয়া, জিপিএস যন্ত্রের ত্রুটি বা দিক হারানোর মতো পরিস্থিতিতে ফিশিংবোট অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রতিবেশী দেশের জলসীমায় প্রবেশ করে যেতে পারে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে জেলেদের নিরাপত্তা নির্দেশিকা শক্তিশালী করা এবং সীমানা চিহ্নিতকরণ ও মনিটরিং ব্যবস্থা আরও উন্নত করার প্রয়োজন রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

বর্তমানে আটক জেলেদের মুক্তি ও দেশে প্রত্যাবর্তন দুই সরকারের মধ্যে কূটনৈতিক যোগাযোগের ওপর নির্ভর করছে। পরিবারের সদস্যরা সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকার উদ্বেগ কাটলেও এখন তারা প্রিয়জনদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষা করছেন।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com