আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে সরাসরি ক্ষমতা ছেড়ে অন্য কোনো দেশে পালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গত ২১ নভেম্বর দুই নেতার মধ্যে এক ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়, যার মাধ্যমে ট্রাম্প মাদুরোকে নিজ এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পদত্যাগের প্রস্তাব দেন। তবে মাদুরো এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন।
মার্কিন প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ফোনালাপটি সীমিত সময়ের ছিল এবং দুই দেশের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনার সূচনা করেনি। ট্রাম্প পরবর্তীতে সাংবাদিকদের জানান, ফোনালাপটি কেমন হয়েছিল তা তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রকাশ করবেন না, এবং এটি শুধুমাত্র একটি সংক্ষিপ্ত কথোপকথন ছিল।
সূত্রের বরাতে জানা যায়, ট্রাম্প মাদুরোকে বলেছেন, তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা যদি এই মুহূর্তে পদত্যাগ করেন, তবে নিজেদের নিরাপদ রাখতে সক্ষম হবেন। তবে মাদুরো তার রাজনৈতিক ক্ষমতা ছাড়ার পরিবর্তে সেনাবাহিনীর ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার কথা জানিয়েছেন। ফোনালাপের পর থেকে দুই নেতা আর সরাসরি কোনো যোগাযোগ করেননি।
মাদুরো আরও জানিয়েছেন, তিনি দেশের জনগণকে কোনো ধরনের ‘ক্রীতদাসে শান্তি’ দিতে চাচ্ছেন না। চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেন। মাদুরো এরপর তার সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ট্রাম্প কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
প্রাথমিকভাবে, ফোনালাপটির আয়োজন ব্রাজিল, কাতার এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় সম্পন্ন হয়। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্প মাদুরোকে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানালেও তা বাস্তবায়নের জন্য বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালানোর সম্ভাবনা কম।
মাদুরোর পদত্যাগ না করার পরিপ্রেক্ষিতে ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতি দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক কূটনীতিক সম্পর্কের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার সম্পর্কের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নির্ধারণে এই ফোনালাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া, স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের প্রতিক্রিয়া ও পদক্ষেপ পরবর্তী রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।
মাদুরোর পদক্ষেপ ও ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এবং কূটনীতিকদের মধ্যে বিভিন্ন কৌশলগত বিশ্লেষণের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা ভবিষ্যতে দেশ দুটির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ও শক্তি ভারসাম্যের দিকনির্দেশনা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।