আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামী বছরের জন্য সংস্থার বাজেট ১৫.১ শতাংশ হ্রাস এবং ১৮.৮ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই পদক্ষেপ মূলত দাতা দেশগুলোর কাছ থেকে প্রত্যাশিত অর্থ প্রাপ্তিতে ঘাটতির কারণে নেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার ২০২৬ সালের বাজেট ঘোষণা করার সময় গুতেরেস জানিয়েছেন, আগামী বছরের বাজেট ধরা হয়েছে ৩.২৪ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৫ সালের তুলনায় ৫৭৭ মিলিয়ন ডলার কম। সংস্থার বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, উন্নত বিশ্বের দেশগুলো প্রত্যাশিত অর্থ প্রদান না করায় জাতিসংঘের দাতা দেশগুলোর কাছে পাওনা প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলারের দিকে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের পৃথক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলোর অনিয়মিত অর্থ প্রদান সংস্থার কার্যক্রমে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। এই কারণে সংস্থাটি বাজেট কমানোর পাশাপাশি কর্মী সংখ্যা হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
তবে ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর বাজেট আগের মতোই থাকবে। সংস্থাটি এই খাতে ব্যাপক সহযোগিতা ও সহায়তার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে আগের বাজেট বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া আফ্রিকার উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থার বাজেটও ২০২৫ সালের সমান রাখা হবে।
জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা থেকে মোট ২,৬৮১টি পদ বাদ দিয়ে নতুন বাজেট সমন্বয় করা হবে। দাতা দেশগুলো থেকে অর্থ না আসায় আগে থেকেই প্রায় ১৮ শতাংশ পদ খালি রয়েছে। এই খালি পদগুলোর মানুষ চলে যাওয়ার পর আর নতুন কর্মী নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিশেষ রাজনৈতিক মিশনের বাজেট ২০২৫ সালের তুলনায় ১৪৯.৫ মিলিয়ন ডলার কমিয়ে ৫৪৩.৬ মিলিয়ন ডলারে আনা হবে, যা ২১.৬ শতাংশ হ্রাস নির্দেশ করে। এই খাতে বাজেট হ্রাসের ফলে কয়েকটি মিশন ও কার্যক্রম বন্ধ করা হবে।
জাতিসংঘ ইতিমধ্যেই নিউইয়র্কে তাদের উপস্থিতি কমানো শুরু করেছে। গুতেরেস জানিয়েছেন, ২০২৭ সালের শেষ দিকে দুটি অফিস ভবনের লিজ বাতিল করা হবে, যা ২০২৯ সাল থেকে বছরে ২৪.৫ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করবে। ২০১৭ সাল থেকে নিউইয়র্কে বিভিন্ন অফিস বন্ধ করে সংস্থাটি ইতিমধ্যেই ১২৬ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাজেট হ্রাস এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে সংস্থার কার্যক্রমে প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষত উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা খাতে। দাতা দেশগুলো থেকে অর্থ প্রাপ্তি এবং সংস্থার অভ্যন্তরীণ খরচ নিয়ন্ত্রণ ভবিষ্যতে জাতিসংঘের কার্যকারিতা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।