নিজস্ব প্রতিবেদক
ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) বর্তমানে অনলাইন বেটিং অ্যাপের মাধ্যমে বিশাল অংকের আর্থিক তছরুপ সংক্রান্ত একটি মামলা তদন্ত করছে। এই অভিযানের প্রেক্ষিতে বলিউড এবং টলিউডের প্রথম সারির বহু চলচ্চিত্র তারকা ও প্রাক্তন খেলোয়াড়দের ওপর নজর রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি ইডি বলিউড অভিনেত্রী নেহা শর্মাকে এই সংক্রান্ত অভিযোগের কারণে নোটিশ পাঠায়। নেহা শর্মা হলেন কংগ্রেস নেতা অজিত শর্মার কন্যা। পিটিআই সূত্রে জানা গেছে, নোটিশ প্রাপ্তির পর গত মঙ্গলবার তিনি ইডির কার্যালয়ে উপস্থিত হন এবং সেখানে তার বক্তব্য রেকর্ড করা হয়। এ বিষয়ে অভিনেত্রী বা তার পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নেহা শর্মা এই মামলার প্রথম লক্ষ্য নয়। অনলাইন বেটিং অ্যাপের প্রচার বা বিজ্ঞাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়ে এর আগে বলিউডের অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রী, প্রাক্তন খেলোয়াড়, এবং জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম প্রভাবকরাও ইডির সমন পেয়েছেন। বিষয়টি ভারতীয় বিনোদন ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে, কারণ এতে বিনোদন জগৎ ও ডিজিটাল অর্থনীতির সংযোগের দিকটি সামনে আসে।
নেহা শর্মা ২০০৭ সালে তেলেগু ছবি ‘চিরুথা’-র মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন। বলিউডে তার পরিচিতি আসে ২০১০ সালে ‘ক্রুক’ সিনেমার মাধ্যমে। এরপর তিনি ‘ক্যায়া সুপার কুল হ্যায় হাম’, ‘ইয়ংগিস্তান’, ‘তুম বিন ২’ এবং ‘তানহাজি: দ্য আনসাং ওয়ারিয়র’-এর মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পাশাপাশি, তিনি কিছু ওয়েব সিরিজেও অংশগ্রহণ করেছেন। তার ক্যারিয়ার এবং প্রফেশনাল পরিচিতি অনুসারে, তার উপস্থিতি এই মামলায় নজরকাড়া বিষয় হিসেবে ধরা হচ্ছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতীয় বিনোদন এবং ডিজিটাল অর্থনীতির সম্পর্কিত আইন, অনলাইন বেটিং নিয়ন্ত্রণ, এবং আর্থিক স্বচ্ছতা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ওঠেছে। ইডির অভিযানকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট তারকাদের আর্থিক লেনদেন এবং বিজ্ঞাপনমূলক কার্যক্রমের রেকর্ড যাচাই করা হচ্ছে। সম্ভাব্য অনুসন্ধান ও মামলা পরিচালনার ফলাফল শিল্পী ও বিনোদন সংস্থাগুলোর জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।
এছাড়া, অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের নিয়ন্ত্রণ, স্বচ্ছতা ও আইনগত বাধ্যবাধকতা আরও জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা এই ঘটনার আলোকে উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের তদন্ত ভবিষ্যতে বিনোদন জগত ও ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
সংক্ষেপে, নেহা শর্মা সহ অন্যান্য তারকাদের বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপ ও অনলাইন বেটিং অ্যাপ প্রচারের অভিযোগ ভারতের বিনোদন জগত এবং অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। ইডির চলমান তদন্তের ফলাফলের উপর পুরো ঘটনা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভবিষ্যত কর্মকাণ্ড নির্ভর করবে।