নিজস্ব প্রতিবেদক
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বিশ্বখ্যাত অর্থ ও উদ্যোক্তা বিষয়ক প্রকাশনা ফোর্বস তাদের ১৫তম বার্ষিক ‘৩০ অনূর্ধ্ব ৩০ ক্লাস অফ ২০২৬’ তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় ২০টি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ৬০০ তরুণের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যারা ৩০ বছর বয়সের মধ্যে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছেন এবং ভবিষ্যতে ব্যবসা ও সমাজে নতুন উদ্ভাবন আনার সম্ভাবনা রাখেন।
তালিকাটি মূলত উত্তর আমেরিকা অঞ্চলের তরুণ উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবকদের কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়। এই বছরের তালিকায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, ফাইনান্স, মিডিয়া, সামাজিক প্রভাব ও শিল্প-উদ্যোক্তা ক্ষেত্রের প্রতিভাবানদের বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তালিকাভুক্ত ব্যক্তিরা সাধারণত তাদের প্রতিষ্ঠিত বা সহ-প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সামাজিক ও আর্থিক প্রভাব ফেলেছেন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিভাগে তালিকায় স্থান পাওয়া তরুণরা নতুন মডেল, মেশিন লার্নিং এবং সাইবার নিরাপত্তা সমাধান নিয়ে কাজ করছেন। ফাইনান্স বিভাগে রয়েছে ট্রেডিং, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং আর্থিক প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন আনার ক্ষেত্রের তরুণরা। মিডিয়া বিভাগে ডিজিটাল কন্টেন্ট, পডকাস্ট এবং নতুন ধরনের প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে সক্রিয় ব্যক্তিত্বরা অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া ম্যানুফ্যাকচারিং ও শিল্প ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ভাবন আনা উদ্যোক্তাদেরও তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে।
তালিকার কিছু উল্লেখযোগ্য নামের মধ্যে আছেন ক্রেয়া-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ভিক্টর পেরেজ এবং ডিয়েগো রদ্রিগেজ প্রাডো। মিডিয়া বিভাগে স্থান পেয়েছেন এনজয় বাস্কেটবল-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা কেনট্রেল বিচাম, লেখক বেল বান্টা, রিচ লিটল ব্রোকগার্লস-এর প্রতিষ্ঠাতা কিম্বারলি বিজু এবং ভিডিও প্রযোজক অড্রে ব্ল্যাকমোর। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিভাগে রয়েছেন ডেলভ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা করুণ কৌশিক এবং ফারসাইট-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা সমীর দত্ত ও কুনাল টাংরি। ফাইনান্স বিভাগে তালিকাভুক্ত হয়েছেন কোবাল্ট ল্যাবস-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা আশি আগ্রেওয়াল ও কল্যাণী রামাদুর্গম এবং সিটাডেল-এর ট্রেডার আর্কিন গুপ্ত। এছাড়া বিউটি ক্রিয়েটর মনিকা রভিচন্দ্রনও তালিকায় জায়গা করেছেন।
ফোর্বসের ৩০ অনূর্ধ্ব ৩০ তালিকা উদ্ভাবক তরুণদের কৃতিত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের কাজকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরে। এটি তরুণ উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তি, মিডিয়া, ফাইনান্সসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্ভাবন চালানোর আগ্রহী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। তালিকাভুক্ত ব্যক্তিরা শুধু ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে নয়, সামাজিক উদ্যোগ ও প্রভাবশালী প্রকল্পের মাধ্যমে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
বিশ্বব্যাপী এই ধরনের তালিকা তরুণ প্রতিভাদের সাফল্য এবং উদ্ভাবনশীলতার মানদণ্ড নির্ধারণে সহায়তা করে। তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়া উদ্যোক্তারা সাধারণত দ্রুত বর্ধনশীল উদ্যোগে নেতৃত্ব দেন এবং নতুন প্রযুক্তি ও ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা রাখেন। আগামী দিনের ব্যবসা, শিল্প ও সামাজিক উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে তাদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
ফোর্বসের এই উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণ উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরা হচ্ছে, যা তাদের কর্মজীবন ও প্রকল্পের জন্য নতুন দিকনির্দেশনা ও সুযোগ তৈরি করছে। তালিকায় স্থান পাওয়া প্রতিটি ব্যক্তি তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে নতুন ধারা এবং উদ্ভাবনী সমাধান প্রদানের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য মডেল স্থাপন করছেন।