1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৩ বার দেখা হয়েছে

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দক্ষিণ এশিয়ায় স্থবির আঞ্চলিক সহযোগিতা পুনরুজ্জীবিত করতে নতুন জোট গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইশহাক দার। গত বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ কনক্লেভ ফোরামে তিনি বলেন, আঞ্চলিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে সহযোগিতামূলক কাঠামো শক্তিশালী করতে হবে এবং কোনো দেশের অচলাবস্থার কারণে এ লক্ষ্যমাত্রা যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।

ফোরামে দেওয়া বক্তৃতায় ইশহাক দার উল্লেখ করেন, পাকিস্তান সংঘাতের পরিবর্তে সহযোগিতাকে প্রাধান্য দিতে চায় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় এমন একটি পরিবেশ গঠন করতে আগ্রহী যেখানে সম্পর্ক, আস্থা ও পারস্পরিক উন্নয়নকে ভিত্তি করে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রধান প্ল্যাটফর্ম সার্ক দীর্ঘদিন ধরেই অকার্যকর হয়ে আছে। ভারত–পাকিস্তান উত্তেজনার কারণে গত প্রায় আট বছর কোনো শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০১৬ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিতব্য ১৯তম সার্ক সম্মেলন স্থগিত হওয়ার পর থেকে জোটটির কার্যক্রম স্থবির। বিশ্লেষকদের মতে, সার্কের এই অচলাবস্থা দক্ষিণ এশিয়ার সম্ভাব্য বাণিজ্য, সংযোগ ও উন্নয়ন কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।

গত জুনে চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবিক জীবনমান উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা জানান, এটি কোনো তৃতীয় দেশকে লক্ষ্য করে নয়; বরং পারস্পরিক স্বার্থ ও আঞ্চলিক উন্নয়নকে সমর্থন করার উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হয়েছে। ইশহাক দারের সর্বশেষ বক্তব্য এই কাঠামোকে আরও বিস্তৃত আঞ্চলিক উদ্যোগে রূপ দেওয়ার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ফোরামে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে সংলাপের অচলাবস্থা বহুদিন ধরে চলছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অনিশ্চয়তা বিদ্যমান। তার মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় বিভাজনের রাজনীতির বদলে সহযোগিতা জোরদার হলে অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব।

লাহোর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ রাবেয়া আক্তার মনে করেন, পাকিস্তানের এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন বর্তমানে কঠিন হতে পারে। তবে সার্কের অচলাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান যে বহুমুখী আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের সম্ভাবনা অনুসন্ধান করছে, তা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলো যদি ছোট, নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক উপদলগুলোর মধ্য দিয়ে ব্যবহারিক সহযোগিতার সম্ভাবনা দেখতে পায়, তাহলে নতুন উদ্যোগ কার্যকর হতে পারে।

১৯৮৫ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত সার্কে বর্তমানে আটটি দেশ সদস্য। দক্ষিণ এশিয়ার জনসংখ্যা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ; কিন্তু আঞ্চলিক বাণিজ্যের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে খুব কম। সার্কভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্য মোট আঞ্চলিক বাণিজ্যের মাত্র পাঁচ শতাংশের মতো। অপরদিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আসিয়ান দেশগুলোর ক্ষেত্রে এই হার প্রায় ২৫ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের হিসাব বলছে, আঞ্চলিক প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি করে বছরে প্রায় ৬৭ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত নিতে পারবে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভারত–পাকিস্তান সম্পর্কের উন্নতি ছাড়া সার্ক কাঠামো পুনরুদ্ধার কঠিন। ২০২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্য হয়েছে মাত্র ১.২ বিলিয়ন ডলার, যদিও তৃতীয় দেশের মাধ্যমে বাণিজ্যের পরিমাণ এর বহু গুণ বেশি। আঞ্চলিক সংযোগ দুর্বল থাকাও বাণিজ্য সম্প্রসারণে বাধা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

পাকিস্তানের প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা নিয়ে আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থার আঞ্চলিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, সার্কের অচলাবস্থার ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন জোট গঠনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল মিলে বিবিআইএন উদ্যোগ এবং বাংলাদেশসহ ছয় দেশের বিবেশমটেক (বিমসটেক) কাঠামো গঠিত হয়েছে, যা আঞ্চলিক সহযোগিতার বিকল্প প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হয়।

তবে নতুন প্রস্তাব সফল হলে দক্ষিণ এশিয়ার বিদ্যমান ভূরাজনৈতিক ভারসাম্যে পরিবর্তন আসতে পারে বলে বিশ্লেষকদের মন্তব্য। সম্ভাব্য সহযোগিতা কাঠামোতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অগ্রাধিকার, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতা এবং চীনের ভূরাজনৈতিক প্রভাব কীভাবে প্রভাব ফেলবে—তা ভবিষ্যতের আলোচনাকে নির্ধারণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিনের। পাকিস্তানের নতুন প্রস্তাব সেই আলোচনাকে নতুন করে সামনে আনতে পারে। তবে কোন দেশ এতে আগ্রহী হবে, কোন বিষয়কে ভিত্তি করে নতুন কাঠামো গঠিত হতে পারে এবং তা বিদ্যমান উত্তেজনাকে কোনদিকে নিয়ে যাবে—তা এখনো অনিশ্চিত।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com