বিনোদন ডেস্ক

আরিফিন শুভ ও জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী অভিনীত নতুন সিনেমা ‘নূর’ আসছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। রায়হান রাফী পরিচালিত প্রেমনির্ভর এ চলচ্চিত্রটি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের পরিবর্তে সরাসরি ওটিটি মাধ্যম বায়োস্কোপ প্লাসে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে দর্শকরা প্ল্যাটফর্মটিতে সিনেমাটি দেখতে পারবেন।

সিনেমাটিতে আরিফিন শুভ ও ঐশী তৃতীয়বারের মতো জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন। এর আগে তারা দুটি চলচ্চিত্রে একসঙ্গে কাজ করেছেন। নতুন সিনেমা নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ বাড়তে শুরু করে গত ২৯ নভেম্বর প্রকাশিত ৪২ সেকেন্ডের অফিসিয়াল টিজারকে কেন্দ্র করে। টিজারে গল্পের আবহ, চরিত্রগুলোর আবেগ এবং প্রেম-বিরহের ইঙ্গিত তুলে ধরা হয়। টিজার প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং সিনেমাটিকে ঘিরে আলোচনাও বৃদ্ধি পায়।

টিজারে একটি চুমুর দৃশ্য সামনে আসার পর বিষয়টি নিয়ে দর্শকদের মধ্যে নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে ধারণা প্রকাশ করেন যে, প্রচারণার উদ্দেশ্যে দৃশ্যটি আগে থেকেই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে শুভ ও ঐশীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়েও বিভিন্ন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এসব প্রতিক্রিয়া দ্রুতই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে এবং সিনেমাটি নিয়ে আগ্রহের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়।

এ বিষয়ে নায়িকা জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদান করেন। তিনি জানান, ‘নূর’–এ থাকা চুমুর দৃশ্যটি সম্পূর্ণ অভিনয়ের অংশ, এর সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁর ভাষায়, অভিনয়ে চরিত্র ও গল্পের প্রয়োজনে যে দৃশ্য প্রয়োজন হয়, অভিনেতা–অভিনেত্রীদের তাকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করতে হয়। তিনি আরও বলেন, চুমুর দৃশ্য না থাকলে হয়তো অন্য কোনো আবেগপূর্ণ বা নাটকীয় দৃশ্য থাকত; মূল বিষয় হলো চরিত্রের প্রকাশ ও গল্পের স্বার্থে প্রয়োজনীয় অভিনয়।

ঐশী বর্তমানে আরেকটি চলচ্চিত্রের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি শাকিব খানের সঙ্গে ‘সোলজার’ সিনেমার শুটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন এবং অধিকাংশ দৃশ্যধারণ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। অন্যদিকে, ‘নূর’–এর মুক্তিকে কেন্দ্র করে অভিনেতা–অভিনেত্রীদের সময় ব্যয় বাড়ছে এবং দর্শক ও শিল্পী মহলে সিনেমাটি নিয়ে প্রত্যাশা বাড়ছে।

বাংলাদেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে চলচ্চিত্র মুক্তির প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিবর্তিত দর্শক চাহিদা, ডিজিটাল কনটেন্টের সহজলভ্যতা এবং প্রেক্ষাগৃহের বাইরে বৃহত্তর দর্শকগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর সুযোগ—এসব কারণে নির্মাতারা ওটিটিকে একটি সম্ভাবনাময় মাধ্যম হিসেবে দেখছেন। ‘নূর’–এর ওটিটি মুক্তিও এই ধারার একটি সাম্প্রতিক উদাহরণ। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির চাপ, হলের সংখ্যা, বাণিজ্যিক বিবেচনা এবং দর্শকের নতুন অভ্যাস—এসব বিষয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে চলচ্চিত্র প্রদর্শনের বিকল্প হিসেবে গুরুত্ব বাড়িয়েছে।

সিনেমার গল্প, নির্মাণশৈলী, অভিনেতাদের রসায়ন ও টিজারের ইঙ্গিত—সব মিলিয়ে ‘নূর’কে ঘিরে দর্শকদের আগ্রহের মাত্রা ইতোমধ্যে বেশ উচ্চ। চলচ্চিত্রটি মুক্তির পর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কেমন সাড়া পায়, তা নিয়ে শিল্পী ও নির্মাতা মহলেও প্রত্যাশা রয়েছে। ওটিটিতে মুক্তি পাওয়ায় দেশের বাইরে থাকা বাংলা ভাষাভাষী দর্শকেরাও সহজেই সিনেমাটি দেখার সুযোগ পাবেন, যা এর দর্শকসংখ্যা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।

‘নূর’–এর মুক্তি দেশের চলচ্চিত্রশিল্পে ডিজিটাল মাধ্যমে বড় বাজেটের ও তারকাবহুল চলচ্চিত্র মুক্তির ধারাকে আরও জোরদার করতে পারে। একই সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহ ও ওটিটি—দুই মাধ্যমের মধ্যে কনটেন্টের ভারসাম্য ও দর্শক অভ্যাসে নতুন ধারা তৈরি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। চলচ্চিত্রটি মুক্তির পর এর নির্মাণশৈলী, গল্প ও অভিনয় নিয়ে আরও আলোচনা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।