রাজনীতি ডেস্ক
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের নির্ধারিত সময়েই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, অতীত ও সাম্প্রতিক বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে প্রমাণিত হয়েছে, জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে তার বিজয়কে কেউ রোধ করতে পারবে না।
আলোচনা সভায় তারেক রহমান বলেন, আসন্ন নির্বাচনের সময় বিএনপি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে। তিনি জানান, গ্রামাঞ্চল, শহর, বাজার, মহল্লা ও রাজপথে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় নিজেও অংশগ্রহণ করবেন। তিনি স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ শীর্ষক নিবন্ধের কথা তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টার মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রতি বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্বী অপশক্তি সক্রিয় রয়েছে। ক্ষমতায় থাকা সরকার, তারেক রহমানের অভিযোগ অনুযায়ী, দলীয় স্বার্থে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে। তিনি বলেন, বিজয়ের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা অপরিহার্য।
তারেক রহমান আরও বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে দেশে যতবার গণতন্ত্র হুমকির মুখোমুখি হয়েছে, ততবারই দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। তিনি ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর ও ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ঘটনা উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন। বিএনপি সব সময় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর নির্বাচন কমিশন অবশেষে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও থেমে নেই। গণতন্ত্রের পক্ষের কর্মী ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে হামলা করা হয়েছে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে দেশের স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন চক্র লাভবান হবে। তারেক রহমান বলেন, স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যর্থ হবে।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন শুধুমাত্র ‘এক্সপেরিমেন্ট বা এক্সপেরিয়েন্স’ অর্জনের নির্বাচন নয়, এটি অতীতের যেকোনো নির্বাচনের তুলনায় জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনের সঙ্গে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা এবং দেশের সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের বিষয় জড়িয়ে আছে।
তিনি বলেন, আগামী দশকটি দেশের রূপান্তরের দশক হবে। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, চার কোটির বেশি তরুণ এবং কোটি কোটি কৃষক-শ্রমিকের সম্পৃক্ততায় স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা বিএনপির লক্ষ্য। তিনি শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন, যারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে, ২০২৪ সালের স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধে এবং দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রাণ উৎসর্গ করেছেন।
আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।