বিনোদন ডেস্ক
বলিউড অভিনেত্রী জায়রা ওয়াসীম, যিনি ‘দঙ্গল’ ছবির মাধ্যমে দেশের কাছে পরিচিত হন, সম্প্রতি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমারের একটি ঘটনার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে আড়ালে থাকা জায়রা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনায় নিজের অবস্থান প্রকাশ করেছেন।
ঘটনাটি ঘটে সম্প্রতি, যখন একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, হিজাব পরিহিত এক নারী চিকিৎসককে নিয়োগপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার তার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করেন, ‘এটা কী?’ এরপর তিনি সামান্য ঝুঁকে ওই চিকিৎসকের হিজাব সরানোর চেষ্টা করেন। এই পরিস্থিতি মঞ্চেই ঘটে, যা মুহূর্তের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দেয়।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, আচমকা এই ঘটনায় নারী চিকিৎসক হতভম্ব হয়ে পড়েন এবং তাকে পরিস্থিতি সামাল দিতে হাত ধরে মঞ্চ থেকে নামানো হয়। এই সময় উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ থামানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু ততক্ষণে ঘটনা ঘটেই গেছে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে জায়রা ওয়াসীম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, একজন নারীর সম্মান নিয়ে প্রকাশ্যে এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেছেন, একজন মুসলিম নারী হিসেবে অন্য মুসলিম নারীর পর্দা নিয়ে হস্তক্ষেপ এবং সেই সঙ্গে হাস্যরস, বিষয়টি তাকে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ করেছে। জায়রা দাবি করেছেন, ক্ষমতার অবস্থানে থাকা মানেই সীমা লঙ্ঘনের অধিকার পাওয়া নয় এবং নিতীশ কুমারের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করতে বলেছেন।
এ ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও এসেছে। আরজেডি ও কংগ্রেসসহ একাধিক বিরোধী দল মুখ্যমন্ত্রীর আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছে। তবে নিতীশ কুমারের দল জনতা দল (ইউনাইটেড) এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিও এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে জনমত মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি লিঙ্গ ও ধর্মীয় সংবেদনশীলতার পাশাপাশি সরকারি দায়িত্ব পালন ও ব্যক্তিগত আচরণের সীমারেখা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সম্ভাবনাও তৈরি করেছে।
ঘটনাটি বিবেচনায়, সরকারি অনুষ্ঠান ও নিযুক্তি প্রক্রিয়ায় আচরণগত নীতি এবং নারী অধিকার সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো পুনরায় আলোচনার বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্ষমতার অবস্থানে থাকা ব্যক্তির নৈতিক ও সামাজিক দায়বোধের বিষয়টি এই ঘটনার মাধ্যমে নতুনভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
জায়রা ওয়াসীমের মন্তব্য এবং রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে বিষয়টি সমসাময়িক রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।