1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
শাবনূরের জন্মদিনে ‘দুই নয়নের আলো’-র স্মরণ ডেঙ্গু আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি বৃদ্ধি, সাম্প্রতিক ২৪ ঘণ্টায় কোন মৃত্যু নেই বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ২২৫ রানের সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল আসছে, আরও অন্যান্য দেশ থেকেও প্রস্তাবনা এসেছে সচিবালয়ে ভাতা বিতর্কে ১৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাময়িক বরখাস্ত দেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা চেকপোস্ট জোরদার বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের অভিযানে বিস্ফোরক মামলার পলাতক আসামি গ্রেপ্তার কেন খুন হলেন পাবনার বিএনপি নেতা ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ, নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তলব

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিচ্ছিন্ন করার বক্তব্যে আসাম মুখ্যমন্ত্রীর কড়া প্রতিক্রিয়া

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ১ বার দেখা হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য, যা ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত, এবং সিকিমকে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা করার বিষয়ে সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ভারতের ভৌগোলিক অখণ্ডতা নিয়ে কোনো ধরনের হুমকি বা বক্তব্য দেশটি গ্রহণ করবে না এবং এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার নীরব থাকবে না।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) আসামের রাজধানীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, বাংলাদেশি রাজনীতিকদের কেউ কেউ যদি ধারাবাহিকভাবে ভারতের ভৌগোলিক অখণ্ডতা প্রশ্নবিদ্ধ করে বক্তব্য দিতে থাকেন, তাহলে দিল্লি তা উপেক্ষা করবে না। তিনি ইঙ্গিত দেন, বিষয়টি কেবল রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে দেখার সুযোগ নেই; বরং এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য উদ্বেগজনক।

আসাম মুখ্যমন্ত্রীর মতে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করে অন্য কোনো দেশের সঙ্গে যুক্ত করার আহ্বান বাস্তবতাবিবর্জিত এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন। তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য একটি অস্বাভাবিক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ, যা প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিদ্যমান কূটনৈতিক সম্পর্কের পরিপন্থী। তাঁর দাবি, গত এক বছর ধরেই বাংলাদেশে বিভিন্ন পর্যায় থেকে এ ধরনের বক্তব্য শোনা যাচ্ছে, যা ভারতের কাছে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।

হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে বারবার এমন ধারণা তুলে ধরা হচ্ছে যে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল আলাদা করে অন্য দেশের সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব। তাঁর মতে, এটি ইতিহাস, ভূগোল ও আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারত একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং তার ভৌগোলিক সীমানা নিয়ে কোনো ধরনের কল্পনাভিত্তিক বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।

ভারতের সামরিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, ভারত একটি বড় দেশ, পারমাণবিক সক্ষমতাসম্পন্ন রাষ্ট্র এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে আছে। তাঁর অভিযোগ, বাংলাদেশে ভারতের সক্ষমতা ও অবস্থান সম্পর্কে ভুল ধারণা ছড়ানো হচ্ছে। এ ধরনের বিভ্রান্তি ও বক্তব্য অব্যাহত থাকলে ভারত উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।

এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে সাম্প্রতিক একটি মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ এক বক্তব্যে বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করা উচিত। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ভারত যদি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও মানবাধিকারে বিশ্বাস না করা ব্যক্তিদের আশ্রয় দিতে থাকে, তাহলে বাংলাদেশও ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দিতে পারে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ভারত অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে।

এর আগে চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের ভৌগোলিক অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই রাজ্যগুলো স্থলবেষ্টিত এবং সমুদ্রে যাওয়ার একমাত্র কার্যকর পথ বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে। এই বক্তব্যের পর থেকেই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্তকারী পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি করিডোর, যা ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত, তা নিয়ে নানা আলোচনা ও উদ্বেগের বিষয় সামনে আসে।

এই প্রেক্ষাপটে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ভারতকে হুমকি দেওয়ার আগে বাংলাদেশের নিজেদের ভৌগোলিক বাস্তবতা ও সংবেদনশীল করিডোরগুলোর বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া উচিত। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে মেঘালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম গারো পাহাড় পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি পথ রয়েছে, যা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি তিনি দক্ষিণ ত্রিপুরা থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম করিডোরের কথাও উল্লেখ করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের বক্তব্য ও পাল্টা প্রতিক্রিয়া ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বজায় রাখতে সংযত ভাষা ও দায়িত্বশীল আচরণ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com