জাতীয় ডেস্ক
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ব্রেন সক্রিয় না থাকলেও শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলো কার্যকর রয়েছে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ইনকিলাব মঞ্চ থেকে তার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ আপডেট জানানো হয়েছে।
সংবাদে বলা হয়েছে, হাদির ব্রেন সক্রিয় করতে একটি ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন প্রয়োজন, যা সম্পন্ন করার আগে শরীরকে সম্পূর্ণভাবে স্থিতিশীল করতে হবে। অপারেশন সিঙ্গাপুর বা ইংল্যান্ডের যেকোনো হাসপাতালে হতে পারে। বর্তমানে চিকিৎসকদের মূল লক্ষ্য হলো শরীর ও ব্রেনের মধ্যে সংযোগ পুনঃস্থাপন করা।
ওসমান হাদির চিকিৎসা বিষয়ক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্রেন ছাড়া শরীরের সব অঙ্গ সক্রিয় রয়েছে। তিনি গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। গুলির প্রভাব সম্পর্কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছিলেন, একটি গুলি হাদির কানের ডান পাশ দিয়ে প্রবেশ করে মাথার বাঁ পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। তখনই হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা প্রাথমিক অস্ত্রোপচার করেন।
সেদিন সন্ধ্যায় হাদিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।
ওসমান হাদি জুলাই মাসে দেশের অভ্যুত্থানকালে ঢাকার ৮ নম্বর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিনই তাকে গুলি করা হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে তার চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিয়ে ব্যাপক মনোযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রেন সক্রিয় করতে যে অপারেশন প্রয়োজন তা অত্যন্ত জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তার চিকিৎসা কার্যক্রম ধাপে ধাপে এগোতে হবে, যাতে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের কার্যকারিতা বজায় থাকে এবং সংক্রমণ ও অন্যান্য জটিলতা এড়ানো যায়।
বিশেষজ্ঞরা আরও জানাচ্ছেন, সফল অস্ত্রোপচারের পরই শরীর ও ব্রেনের মধ্যে সংযোগ পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা তৈরি হবে। দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন কার্যক্রমে হাদির স্বাভাবিক শারীরিক কার্যকারিতা ফিরে আসতে পারে।
হাদির অবস্থার আপডেট প্রকাশের মাধ্যমে ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জনগণ এবং সমর্থকদের মধ্যে সচেতনতা এবং সমর্থন বৃদ্ধি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। চিকিৎসা প্রক্রিয়ার সঠিক পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে চিকিৎসক দল নিয়মিতভাবে হাদির শারীরিক অবস্থা মনিটর করছেন।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি সাধারণ জনগণের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে, কারণ হাদির প্রার্থীতা এবং তার ওপর আক্রমণের পটভূমি দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। হাদির স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার ভবিষ্যৎ উন্নয়নের দিকে নজর রাখার বিষয়টি এখন বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।