রাজনীতি ডেস্ক
লেখক, গবেষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান বলেছেন, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড একটি টার্গেটেড কিলিং এবং এর উদ্দেশ্য ছিল দেশে একটি ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করে নির্বাচন বানচাল করা। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর এফডিসিতে ‘আগামী নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের ভূমিকা’ শীর্ষক ছায়া সংসদে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. জাহেদ উর রহমান আরও জানান, ওসমান হাদি মনে করতেন যে, রাজনৈতিক সংকটের একমাত্র সমাধান হল নির্বাচন। তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে আগ্রহী ছিলেন, তবে তাকে হত্যার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে দেশি-বিদেশি অপশক্তি জড়িত থাকার অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর মতে, দেশে যখন এক পক্ষ অন্য পক্ষকে হুমকি দেয়, তখন ভেস্টেড ইন্টারেস্ট গ্রুপগুলো এই পরিস্থিতিকে নিজেদের সুবিধার জন্য কাজে লাগায়।
ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের পর দেশে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, তাও অত্যন্ত দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, “হাদির হত্যাকাণ্ডে কেউই দুঃখিত হয়নি, তবে তার মৃত্যুর পর সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি আরও ভয়ের সৃষ্টি করেছে।” তিনি আরও বলেন, “গণমাধ্যমে ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগ করে প্রতিবাদ করা সঠিক নয়।”
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও ওসমান হাদিকে বাঁচাতে পারিনি। তার হত্যাকাণ্ড জাতির জন্য একটি কালো অধ্যায়।” তিনি আরও বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের জন্য যারা দায়ী, তারা ইতিহাসে কাপুরুষ হিসেবে চিহ্নিত হবে। এর পেছনে ষড়যন্ত্রকারীরা রয়েছেন, যারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাইছেন।”
এছাড়া, তিনি এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ফ্যাসিস্ট শক্তির যোগসাজশ থাকার সম্ভাবনা উল্লেখ করেন। “জুলাই মাসে অভ্যুত্থানের চেতনা ব্যর্থ না হতে দিলে, হাদির রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না,” তিনি বলেন। তিনি আরও বলেন, “যতদিন পর্যন্ত এই ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের চেষ্টা চালিয়ে যাবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।”
ছায়া সংসদের বিচারক হিসেবে ছিলেন সাংবাদিক কাজী হাফিজ, মো. আলমগীর হোসেন, জাকির হোসেন লিটন, কাজী জেবেল ও মো. আতিকুর রহমান। এতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গার্লস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজকে পরাজিত করে প্রথম স্থান অর্জন করে। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট এবং সনদপত্র প্রদান করা হয়।